কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ভণ্ডুল করে দিলেন অমিত শাহ, অভিযোগ কৃষকদের
বৃহস্পতিবার থেকে হরিয়ানার সোনীপতে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর একটি সুপার মার্কেটের সামনেও ঘেরাও-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে কৃষক সংগঠনগুলির কথা চলাকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) আসরে নেমে সব ভণ্ডুল করে দিলেন বলে অভিযোগ তুললেন কৃষক নেতারা।
তিন কৃষি আইন নিয়ে কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে সরকারের আলোচনা কার্যত কানাগলিতে ঢুকে পড়েছে। কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষক সংগঠনগুলি অনড় দেখে মোদী সরকার তথা বিজেপি কৃষি আইন (Farm Laws) নিয়ে এবার ‘ফ্রন্টফুট’-এ খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি কৃষি আইনের গুণগান করতে বিজেপি গোটা দেশে ৭০০ সাংবাদিক সম্মেলন ও ১০০ ‘চৌপাল’ বা সভা করবে। তা দেখে কৃষক সংগঠনগুলি প্রশ্ন তুলেছে, দু’দিন আগেই মোদী সরকার জানিয়েছিল, তারা তিনটি কৃষি আইনে ১৩টি সংশোধনে রাজি। যে সব আইনে এত সংশোধন দরকার বলে সরকার নিজেই মনে করছে, সেই আইনের পক্ষে বিজেপি কোন মুখে প্রচার করবে?
বিজেপি (BJP) নেতাদের দাবি, কৃষি সংস্কারের তিন বিল আনার আগে প্রায় ৯৩ লক্ষ কৃষকের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন অতি-বাম সংগঠনের হাতে কৃষক আন্দোলনের রাশ চলে গিয়েছে। কৃষক নেতারা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের বক্তব্য, এত দিন খালিস্তানি, পাকিস্তান, চিনের হাত দেখা হচ্ছিল। এখন অতি-বামের রটনা শুরু হয়েছে।
সংসদে বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও তিনটি কৃষি সংস্কারের বিল পাশ করানোর পরেই ডিএমকে সাংসদ তিরুচি শিবা এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মামলা ঠুকেছিলেন। আজ ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (ভানু)-ও সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। সংগঠনের সভাপতি ভানুপ্রতাপ সিংহর অভিযোগ, তিন আইন প্রণয়নের পরে চাষিদের কর্পোরেট সংস্থার দয়ায় বাঁচতে হবে। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর (Narendra Singh Tomar) আজ ফের বলেছেন, কৃষক সংগঠনগুলি সরকারের আইনে সংশোধনের প্রস্তাব খতিয়ে দেখে আলোচনায় আসুন। কৃষক নেতাদের পাল্টা অভিযোগ, কৃষক নেতারা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার করবে কি না, তা সরকারকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-তে জানাতে হবে। সরকার কার্যত বলেই দিয়েছে— না। কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, “কৃষিমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে, তাঁর সঙ্গে কৃষক নেতাদের আলোচনার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাক গলালেন কেন? সরকারের যে সব প্রস্তাব কৃষকেরা আগেই খারিজ করে দিয়েছেন, সেই প্রস্তাব অমিত শাহ ফের আলোচনার টেবিলে কেন আনলেন? এখন আলোচনায় অচলাবস্থার দায় কৃষিমন্ত্রীকেই নিতে হবে।” তাঁর অভিযোগ, অমিত শাহ ও নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত অম্বানী-আদানিদের মতো কর্পোরেট সংস্থার হয়ে কাজ করছেন।
শুক্রবার কৃষক সংগঠনগুলি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, শনিবারের মধ্যেই দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে বন্ধবে। সিংঘু, টিকরী, গাজিপুর, পালওয়ালে আরও বেশি কৃষক এসে জড়ো হয়েছেন। তামিলনাড়ু থেকেও কৃষকেরা এসেছেন। তবে আপাতত রেল রোকো হবে না। বৃহস্পতিবার থেকে হরিয়ানার সোনীপতে রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর একটি সুপার মার্কেটের সামনেও ঘেরাও-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।