খুনের রাজনীতি করলে বিজেপির ঠ্যাং ভেঙে দেব: অনুব্রত
খুনের রাজনীতি করতে ময়দানে নামলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া ভালো হবে না বলে এদিন মঞ্চ থেকে সাফ জানিয়ে দেন অনুব্রতবাবু।

খুনের রাজনীতি করবেন না। এধরনের কাজ করলে বাড়ি থেকে বের হতে দেব না। ঠ্যাং ভেঙে দেব। মঙ্গলকোটে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনার পর বুধবার দুবরাজপুরের জনসভা থেকে বিজেপিকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। এদিন দুবরাজপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে তৃণমূলের জনসভায় ভিড় উপচে পড়ে। খুনের রাজনীতি করতে ময়দানে নামলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া ভালো হবে না বলে এদিন মঞ্চ থেকে সাফ জানিয়ে দেন অনুব্রতবাবু।
এদিন তিনি বলেন, বিজেপিকে (BJP) একটা হুঁশিয়ারি দিয়ে যাই। মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের আমাদের এক বুথ সভাপতি বাড়ি যাচ্ছিলেন। তাঁকে একা পেয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার মিটিং ছিল, তাই যেতে পারিনি। আমার মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে সেখানে পাঠিয়েছি। যদি কোনও বিজেপির কর্মী ভেবে নেয় যে, ওরা এধরনের কাজ করবে, তাহলে ওদের বাড়ি থেকে বের হতে দেব না। ঠ্যাং ভেঙে দেব। পারলে কিছু করে নেবেন। খুব সাবধান। আমি নোংরামির রাজনীতি করি না। যদি আপনি নোংরামি করেন, আমি রাজি আছি। যখন বলবেন আমি তখনই রাজি আছি। রাজনীতি করার সবার অধিকার আছে। রাজনীতি করুন, কিন্তু খুনের রাজনীতি করবেন না। হুঁশিয়ারি দিলাম। আর না হলে যদি আপনি চ্যালেঞ্জ করেন, তাহলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। হিম্মত থাকলে লড়ে নিন আমার সঙ্গে। সে যত বড়ই মস্তান হোক আর যত বড়ই লাটসাহেব হোক, সে যদি ভেবে নেয় যা খুশি তাই করবে তাহলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। আমি অনুব্রত মণ্ডল, আমি মৃত্যুর ভয় করি না। আগেও করিনি। এখনও মৃত্যুর ভয় করি না। কোনও কর্মীর গায়ে যদি এক বিন্দু হাত পড়ে তাহলে ছাড়ব না।
অন্যান্য দিনের মতো এদিনের জনসভা থেকেও অনুব্রত মণ্ডল দেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আক্রমণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি দুবরাজপুর এলাকার নেতাদের মনোমালিন্য মিটিয়ে এক লক্ষ্যে লড়াইয়ের আর্জি করেন। পাশাপাশি নিজের দলেরই দুই যুব সভাপতিকে পদ থেকেই সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। তিনি বলেন, এই দুবরাজপুর এলাকায় যুব তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সভাপতি রয়েছেন, তাঁরা সক্রিয় নন। তাঁরা দ্রুত সক্রিয় না হলে দলের ক্ষতি হবে। দরকারে আপনাদের সরিয়ে দিতে বাধ্য হব। রাগ করবেন না। তৃণমূল থেকে দল বদল করে যেসব নেতা বিজেপিতে যোগদান করেছেন, তাঁদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাঁরা দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন, তাঁদের কোনও দাম নেই। নেতার কোনও দাম নেই। যাঁরা গিয়েছেন তাঁরা একা গিয়েছেন। যাঁদের দাম, তাঁরা হলেন দলের কর্মীরা। আমি নেতা নই। আমিও আপনাদের মতো সাধারণ কর্মী। আমি নেতা হতে চাই না। দলের কর্মী হয়ে থাকতে চাই। আপনারা যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ভালবাসেন। আমিও তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালোবাসি। এদিন নাম না করে রামপুরহাটে উল্টো জাতীয় পতাকা উত্তোলন প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে অনুব্রতবাবু বলেন, যাঁরা বলছেন, বাংলাকে সোনার বাংলা বানাব, বাংলা দখল করব, তাঁরা দিল্লি থেকে আসছেন। শুনেছেন গতকাল রামপুরহাটে কী হয়েছে? উল্টো জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। তাঁরা কিনা আবার বাংলা দখল করবে। সোজা করে জাতীয় পতাকা লাগাতে পারে না, তারা বাংলা কী করে দখল করবে? এদিনের জনসভাতেও উপচে পড়া ভিড় দেখে আপ্লুত হন অনুব্রতবাবু। সভায় আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছাস দেখা যায়।