অনুপর্ণা রায় মনে করেন সমালোচনার জবাব দেয় সাফল্য, আর কী বললেন তিনি?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৪:০৬: ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে এ বছর ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে ইতিহাস তৈরি করেছেন তরুণী পরিচালক অনুপর্ণা রায়। তাঁর প্রথম ছবি Songs of Forgotten Trees জিতেছে সেরা পরিচালকের পুরস্কার। এই অর্জনের পর আনন্দে ভাসলেও অনুপর্ণার বক্তব্য ঘিরে দেশে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক।
ভেনিসের মঞ্চে পুরস্কার নিতে গিয়ে অনুপর্ণা একটি আবেগঘন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “প্রতিটি শিশুরই শান্তি, স্বাধীনতা এবং মুক্তির অধিকার আছে। প্যালেস্টাইনও এর ব্যতিক্রম নয়। করতালির জন্য বলছি না, এটা আমাদের দায়িত্ব। যদি আমার দেশের কিছু মানুষ বা আমার আত্মীয়রা কষ্ট পান, তাতেও আমার কিছু যায় আসে না।”দেশে ফিরে সমালোচনার মুখে পড়ে অনুপর্ণা জানান, তাঁর বক্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। “আমি ভারতকে ভালোবাসি। আমার দেশের প্রতি ভালোবাসা অটল। কিন্তু যদি কোথাও গণহত্যা হয় এবং আমি চুপ থাকি, সেটা আমার বিবেকের বিরুদ্ধে যাবে। আমি শুধু মানবিকতার কথা বলেছি, এতে আমি দেশের প্রতি কম অনুগত হয়ে যাই না,”।
পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার এই মেয়েটি আজ বিশ্ব দরবারে এক নতুন মুখ হয়ে উঠেছে, কাজের সুত্রে পরিবার ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। আজ সেই মেয়ে নিজের কর্মদক্ষতায় দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে বিদেশের মাটিতে।
সর্বভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছবির সাফল্য নিয়ে অনুপর্ণা বলেন, “ভেনিসের মঞ্চে দাঁড়ানো ছিল এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। ছবির প্রদর্শনীর সময় ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু পাঁচ মিনিটের স্ট্যান্ডিং ওভেশন সব দুশ্চিন্তা দূর করে দিল। দর্শকরা ভাষা, সংস্কৃতি, সীমানা ছাপিয়ে ছবিটিকে গ্রহণ করেছেন—এটাই একজন পরিচালকের জন্য সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি।”
ছবিটি তৈরি করাও সহজ ছিল না। নানা বাধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত গল্প বলার তাগিদই তাঁকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ যাত্রায় তাকে প্রচুর সমর্থন করেছেন ভারতীয় সিনেমা জগতের জনপ্রিয় পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ। সেই জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনুপর্ণা জানান, কাশ্যপ ছবিটির গুণগত মান দেখে মুগ্ধ হয়েই প্রেজেন্টার হিসেবে যুক্ত হন। তাঁর সমর্থনের ফলে ছবিটি আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে।
বলিউড থেকেও বহু তারকা তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, কঙ্কনা সেনশর্মা, রাধিকা আপ্টে, বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানেসহ অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছেন।
একসময় পরিবারের বিরোধিতা সত্ত্বেও নিরাপদ চাকরি ছেড়ে সিনেমা জগতে আসা অনুপর্ণার বাবা-মাও এখন তাঁর পেশাকে সম্মান করতে শিখেছেন।
Songs of Forgotten Trees আপাতত আন্তর্জাতিক উৎসবগুলো ঘুরে বেড়াবে। ভারতীয় মুক্তি পেতে সময় লাগলেও অনুপর্ণা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শীঘ্রই দেশেও ছবিটি দেখানো হবে।