সাধারণতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোয় ফের ব্রাত্য বাংলার মনীষীরা? কেন্দ্রের টালবাহানার কড়া জবাব তৃণমূলের
Authored By:
ছবি: ফাইল চিত্র
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:১০: আবারও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ। স্বাধীনতা আন্দোলনে (freedom movement) বাংলার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে সর্বভারতীয় মঞ্চে তুলে ধরতে সাধারণতন্ত্র দিবসের (Republic Day) জন্য বিশেষ ট্যাবলোর পরিকল্পনা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West Bengal)। কিন্তু অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মস্তিষ্কপ্রসূত সেই ভাবনাকে এখনও সবুজ সংকেত দিল না কেন্দ্রের মোদী সরকার (Modi government)। ফলে আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লির রাজপথে বাংলার ট্যাবলোর উপস্থিতি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসানে দেশের স্বাধীনতায় বাংলার বিপ্লবীদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। সেই ইতিহাসকেই দেশের সামনে তুলে ধরতে এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজ্যের ট্যাবলোর থিম ঠিক করা হয়েছিল ‘স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার ভূমিকা’। প্রস্তাবিত এই ট্যাবলোতে স্থান পাওয়ার কথা ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং বিনয়-বাদল-দীনেশ-সহ একঝাঁক কিংবদন্তি বিপ্লবী ও মনীষীর প্রতিকৃতি। নেপথ্যে বাজার কথা ছিল দেশাত্মবোধক গান।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, এবছর ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে কেন্দ্রীয় সরকারের থিম হল ‘বন্দেমাতরম’ এবং ‘সমৃদ্ধি কা মন্ত্র- আত্মনির্ভর ভারত’। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত যে ‘বন্দে-মাতরম’ ধ্বনি তুলে বিপ্লবীরা হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে এগিয়ে গিয়েছেন, সেই ভাবনাই ছিল বাংলার ট্যাবলোর অন্যতম উপজীব্য। কেন্দ্রীয় থিমের সঙ্গে রাজ্যের থিমের এই সাযুজ্য থাকা সত্ত্বেও বাংলার প্রস্তাবকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ এক্সপার্ট কমিটির সঙ্গে ৫ দফা বৈঠকের পরেও বাংলার ট্যাবলোর থিম বা নকশা অনুমোদীত হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, নিছকই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বাংলার এই উদ্যোগকে আটকে রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল সাংসদ মালা রায় (Mala Roy)। কেন্দ্রের এই ভূমিকাকে ‘রাজনৈতিক দীনতা’ বলে কটাক্ষ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মনীষীদের নিয়ে ট্যাবলোর অনুমোদনের জন্য এত বৈঠকের কী প্রয়োজন?’’ তাঁর মতে, যাঁরা দেশের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের এই টালবাহানা আসলে সংকীর্ণ ও প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিরই পরিচয় বহন করে।