“আশ্বিনে রাঁধে কার্তিকে খায় / যা বর মাঙ্গে সেই বর পায়”, আশ্বিন সংক্রান্তির গারসি ব্রত

ব্রতর প্রধান উদ্দেশ্য হেমন্তে মা লক্ষ্মীর আহ্বান করা। একই সঙ্গে মশা-মাছি, কীটপতঙ্গের হাত থেকে পরিবারকে রক্ষা করা। আশ্বিন সংক্রান্তির ভোরে অলক্ষ্মীকে বিদায় দিয়ে লক্ষ্মীকে আহ্বান করে বাড়ির মহিলারা।

October 18, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
আশ্বিন মাসের সংক্রান্তিতে গারসি ব্রত পালন করা হয়, ছবি- ফেসবুক/agt.tripuraindia

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আশ্বিন চলে যাচ্ছে। কার্তিক আসছে, বদলে যাচ্ছে ঋতু। হেমন্তকে স্বাগত জানাতেই পালিত হয় গারসি ব্রত। মূলত পূর্ববঙ্গীয়দের ব্রতানুষ্ঠান এটি। কোথাও কোথাও এটি গারুসংক্রান্তির ব্রত নামেও পরিচিত। আশ্বিন মাসের সংক্রান্তিতে এই ব্রত পালন করা হয়। একদা ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই এই ব্রত পালন করত। গ্রাম বাংলার মেয়ে ও বউরা কৃষিকাজে উন্নতি ও বিভিন্ন রকমের রোগ-ব্যাধি মুক্তির কামনায় এই ব্রতের প্রচলন হয়ে আসছে। আশ্বিন সংক্রান্তি আগের দিন অপরাহ্ন থেকে এই ব্রত শুরু হয়। ব্রতর প্রধান উদ্দেশ্য হেমন্তে মা লক্ষ্মীর আহ্বান করা। একই সঙ্গে মশা-মাছি, কীটপতঙ্গের হাত থেকে পরিবারকে রক্ষা করা। আশ্বিন সংক্রান্তির ভোরে অলক্ষ্মীকে বিদায় দিয়ে লক্ষ্মীকে আহ্বান করে বাড়ির মহিলারা।

গারসি ব্রতে গ্রামের মেয়ে-বউরা গেয়ে বলে-

বুরা গিয়া ভালা আ
অলক্ষ্মীকে তাড়াইয়া লক্ষ্মী আ।
যা যা মশা মাছি উইড়া যা
আমাগো বাড়িত্যে অমুকের বাড়ি যা।

বাড়ির সমস্ত কিছু ধুয়ে উঠোনে গোবর নিকিয়ে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে হলুদ নিমপাতা বেটে একটা বাটিতে তুলসী তলায় সরষের তেল সহযোগে সারা রাতের জন্য ঢাকাবিহীন অবস্থায় রাখা হয়, যাতে হেমন্তের শিশির তাতে মিশে যায়। আম্র পল্লবসহ জলভরা ঘট তুলসী তলায় রেখে, ধূপ দেখিয়ে সেই ঘটের জলে সামান্য সরষে তেল দেওয়া হয়। আশ্বিন মাসের শেষ দিন ভোরে প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ সর্ষের তেল মেশানো একটি জল ভর্তি ঘটি বা গাড়ু বসিয়ে দেওয়া হয়।

আশ্বিন সংক্রান্তির দিন কাক ভোরে পাটকাঠির গুচ্ছে আগুন দিতে দিতে বলা হয়-

“আশ্বিন যায় কার্তিক আসে
মা লক্ষ্মী ঘরে আসে।”

আবার কোথাও কোথাও বলা হয়-

“অলক্ষ্মী দূর এ যাও
লক্ষ্মী ঠাকরুন ঘরে আসো।”

তারপর আগের দিন বেটে রাখা নিম-হলুদ মেখে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্রে তুলসী তলার ঘটের জল সামান্য নিয়ে মুখে মাখতে হবে। এরপর শুরু হয় রান্নাবান্না। এই ব্রতের দিন খেসারির ডাল রাঁধা। ডালে বিভিন্ন ধরণের সবজি, শালুক বা শাপলা, মেটে আলু, কচু ও থোড় দেওয়া হয়। বিভিন্ন ধরণের তরকারি, ভাজা ও কচুর শাক, সবই নিরামিষ পদ এদিন খাওয়া হয়।

কিছুটা ডাল আবার পরের দিন খাওয়ার জন্য রাখা হয়।

“আশ্বিনে রাঁধে কার্তিকে খায়
যা বর মাঙ্গে সেই বর পায়।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen