Asia Cup 2025: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ! শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয় পেতে সুপার ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল সূর্যকুমারদের
![]()
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০০:৫৬: এশিয়া কাপের নিয়মরক্ষার ম্যাচে শুক্রবার মুখোমুখি হয় ভারত ও শ্রীলঙ্কা। এই ম্যাচ থেকে কোনও দলেরই হারানোর কিছু নেই। তবে টিম ইন্ডিয়া আজও তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামার আগে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সংগ্রহ করে নিতে চাইছিল। কিন্তু জয় সহজে এল না। নিয়মরক্ষার ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয় পেতে সুপার ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল সূর্যকুমারদের। প্রথমে ব্যাট করে ভারত করে ৫ উইকেটে ২০২ রান। জবাবে শ্রীলঙ্কার ইনিংসও শেষ হয় ৫ উইকেটে ২০২ রানে। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জয় পেল ভারত।
২০ ওভারের খেলায় অর্শদীপ সিংহ প্রত্যাশা অনুযায়ী বল করতে না পারলেও সুপার ওভারে আক্ষেপ মিটিয়ে দিলেন। খরচ করলেন মাত্র ২ রান। প্রথম বলে আউট করেন কুশল পেরেরাকে। পরে ওভারের পঞ্চম বলে আউট করেন দাসুন শনাকাকে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গার প্রথম বলে ৩ রান তুলে নেন সূর্যকুমার। ম্যাচ জিতে যায় ভারত।
এদিন টসে জিতে এদিন প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। ভারত এদিন দুটি পরিবর্তন করেছে। শিবম দুবে ও জসপ্রীত বুমরাহর পরিবর্তে প্রথম একাদশে এসেছেন অর্শদীপ সিং ও হর্ষিত রানা।
৪ রান করে শুভমান গিল আউট হয়ে যান। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব (১২) এদিনও রান পেলেন না। যেটা নিঃসন্দেহে চিন্তায় রাখবে টিম ইন্ডিয়ার থিঙ্ক ট্যাঙ্ককে। কিন্তু অভিষেক শর্মা আজও লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল। এদিনও তাঁর ব্যাটে চার-ছক্কার কমতি ছিল না। বলা যায়, প্রথমেই বিপক্ষ দলের মনোবল ভেঙে দিচ্ছেন তিনি। আর শুধু মনোবল ভাঙা নয়, এশিয়া কাপে নতুন নজিরও গড়লেন ভারতের বাঁহাতি ওপেনার। অভিষেক এখন একটি টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক।
৮টি চার মারলেন, ছক্কার সংখ্যা ২। স্ট্রাইক রেট ১৯৬.৭৭। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৬১ রান করে আউট হন। ততক্ষণে ভারতের রান ১০০ ছুঁইছুঁই। আর এশিয়া কাপে নিজের রান ৩০০ পেরিয়ে গেল। ৩০৯ রান পকেটে নিয়ে এই এশিয়া কাপে তিনিই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। শুধু এই এশিয়া কাপে নয়, সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যত এশিয়া কাপ হয়েছে, তার একটি সংস্করণে সবচেয়ে বেশি রান অভিষেকেরই। তাঁর পিছনে আছে ২০২২ সালে পাকিস্তানের মহম্মদ রিজওয়ানের ২৮১ রান। এখানেই শেষ নয়। একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ বা একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান করার তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছেন অভিষেক।
অভিষেক আউট হয়ে যাওয়ার পরও রানের কমতি হয়নি। সেই ব্যাটনটা এগিয়ে নিয়ে যান সঞ্জু স্যামসন ও তিলক বর্মা। আশ্চর্যজনকভাবে এই দুজনের ব্যাটিং পজিশন নিয়েই যত পরীক্ষানিরীক্ষা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ম্যাচে তিলক খেলেন ৭ বল। সঞ্জু ব্যাট করার সুযোগই পাননি। আর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সঞ্জু ৩৯ রান করেন। তিলক অপরাজিত থাকেন ৪৯ রানে। শেষে অক্ষর প্যাটেলও ২১ রান করেন। অসাধারণ ক্যাচ ধরে হার্দিককে ফেরান দুষ্মন্ত চামিরা। এই ম্যাচে অনেকগুলো ভালো ক্যাচ ধরে ভারতকে ক্যাচ ধরাও ‘শেখালেন’ লঙ্কান ক্রিকেটাররা। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ভারত ২০২ রান করে।
বড় লক্ষ্যমাত্র তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। খাতা না খুলেই হার্দিক পান্ডিয়ার বলে স্লিপে শুভমন গিলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরলেন কুশল মেন্ডিস। তবে এরপরই ভারতীয় বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা শুরু করেন পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরেরা। পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কা তুলল এক উইকেট হারিয়ে ৭২ রান। ২৫ বলে অর্ধশতক হাঁকালেন নিশাঙ্কা। কোনও ভারতীয় বোলারকেই এদিন রেয়াৎ করেননি তিনি।
শ্রীলঙ্কার ১০০ রান এল ৮.২ ওভারে। পঞ্চাশ বলে অর্ধশতক করলেন কুশল পেরেরা। অবশেষে ভারতকে সাফল্য এনে দিলেন বরুণ চক্রবর্তী। তাঁর বলে কুশল পেরেরাকে স্টাম্প করেন সঞ্জু। কুশল ৩২ বলে করলেন ৫৮ রান। কুশল-নিশাঙ্কার জুটিতে উঠল ১২৭ রান। ১৫৭ রানে পড়ল শ্রীলঙ্কার তৃতীয় উইকেট। কুলদীপ যাদবের বলে গিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক আসালাঙ্কা (৫)। চার ওভারে ৩১ রান দিয়ে কুলদীপ নিলেন এক উইকেট। যার মধ্যে শেষ দুই ওভারে দিলেন মাত্র ৭ রান।
১৬৩ রানে শ্রীলঙ্কার চতুর্থ উইকেটের পতন হল অক্ষর প্যাটেলের দুরন্ত ক্যাচে। অর্শদীপের বলে কামিন্দু মেন্ডিস ফিরলেন মাত্র তিন রান করে। পরপর উইকেটের পতন হলেও অবিচল ছিলেন নিশাঙ্কা। ৫২ বলে এল তাঁর দুরন্ত শতক, চলতি এশিয়া কাপে যা এখন পর্যন্ত একমাত্র সেঞ্চুরি।