করোনা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না, জ্যোতিষীদের গণনা নিয়ে প্রশ্ন

করোনা ভাইরাস কি মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিল জ্যোতিষশাস্ত্রের? লকডাউনের মধ্যেও প্রশ্নটা উঠছে। কারণ, করোনার বিপদের কথা বলতে পারেননি ত্রিকালজ্ঞ জ্যোতিষীরা।

May 18, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

করোনা ভাইরাস কি মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিল জ্যোতিষশাস্ত্রের? লকডাউনের মধ্যেও প্রশ্নটা উঠছে। কারণ, করোনার বিপদের কথা বলতে পারেননি ত্রিকালজ্ঞ জ্যোতিষীরা।

তখন করোনা সংক্রমণ সবে শুরু হয়েছে চিনে। কয়ে হাজার মাইল দূরে নিউ ইয়র্কে বসে সে খবর রাখতেন না আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জ্যোতিষী সুসান মিলার। নববর্ষের প্রাক্কালে দ্য ইয়ার অ্যাহেড-২০২০ অনুষ্ঠানে সুসান মুখোমুখি হন সিবিএস নিউজের অ্যাঙ্কর ব্রিটনি জোনস কুপারের। নতুন বছর সম্পর্কে সুসানের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, দুর্দান্ত একটা বছর আসছে, যা সমৃদ্ধির চূড়ায় উঠবে। প্রত্যেকের ভালো কাটবে। সিবিএসের এই জনপ্রিয় অনুষ্ঠানটির দর্শক কম ছিল না। তাঁরা সুসানের ভবিষদ্বাণী শুনেছিলেন। সুসান বলেছিলেন, মকর রাশির জাতকের কাছে এ বছরটা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। গ্রহ-নক্ষত্রের সম্মিলিত শুভদৃষ্টি মকর জাতকদের দিকে। সুসান বলেছিলেন, কর্কট রাশিতে বিয়ে যোগ স্পষ্ট। অর্থাৎ, অর্থ ও অন্য কারণে যে সব কর্কট জাতকের বিয়ে হচ্ছে না, তাঁদের বিয়ে এবার আটকায় কে! তুলা জাতকদের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় উন্নতির সমূহ সম্ভাবনা। এবং বৃষ রাশিতে দেশ-বিদেশ ভ্রমণ একেবারে হাতের মুঠোয়। সুসানের বক্তব্যের পর তাঁর মুখে ফুল-চন্দন পড়ুক না পড়ুক, হলঘর হাততালিতে ফেটে পড়েছিল।

কিন্তু জ্যোতিষী বলে এক, হয় আর এক। বাস্তব পৃথিবী গ্রহ-নক্ষত্রের কথায় চলে না। তাই ভবিষ্যদ্বাণী মেলেনি সুসানের। সমৃদ্ধি দূরস্ত, মাত্র কয়েক মাসে করোনা মহামারির তাণ্ডবে শ্মশানে পরিণত হয়েছে নিউ ইয়র্ক। বিশ্বের কোনও শহরে করোনায় এত মানুষ মারা যায়নি। পূর্বাভাসের সঙ্গে বাস্তবের এত গরমিল দেখে ক্ষিপ্ত মার্কিন জ্যোতিষীর গুণমুগ্ধরা। সুসানকে একবার হাতের কাছে পেলে হয়! এমনই একজন দিব্যা বব্বর, যিনি কিনা মিলারের ফ্রি অ্যাপের সদস্যও বটে, বললেন, উনি কেমন জ্যোতিষী? উনি তো বলেছিলেন, আমার ব্যবসায় লাভ হবে। কী হল? এত বড় বিপর্যয় তাঁর জ্যোতিষীয় গণনায় ধরা পড়ল না? ইনস্টাগ্রামে আর একজন ক্ষোভপ্রকাশ করে লিখেছেন, সুসান, আপনি ভালো বক্তা, ভালো লেখক। কিন্তু আপনি এত মৃত্যু, এত বেকারত্ব, এত হাহাকারের হদিস দিতে পারলেন না। ধিক আপনাকে।

শুধু সুসান নন, প্রাচ্য বা পাশ্চাত্যের ছোটবড় সব জ্যোতিষীই করোনা মহামারির পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ। এই ব্যর্থতা নতুন কিছু নয়, বলছেন যুক্তিবাদীরা। এর আগে সুনামি থেকে আয়লা, ইন্দিরা গান্ধির মৃত্য়ু থেকে নিউ ইয়র্কের জোড়াস্তম্ভ ধ্বংস, এমনকি নির্বাচনি ফলাফলের মতো সহজবোধ্য ঘটনার কথাও আগাম জানাতে পারেননি জ্যোতিষীরা। কিন্তু করোনা এসে জ্যোতিষীয় ভবিষ্যদবাণীর অন্তঃসারশূন্যতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, জ্যোতিষীদের শেষের সে দিন কি ঘনিয়ে এল? শেষ পেরেকটা কি পোঁতা হয়ে গেল জ্যোতিষের কফিনে?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen