এবার পুজোয় বাজার মাতাবে বালুচরি মেখলা

একই শাড়িতে লুকিয়ে রয়েছে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর সাজ। তিনদিন তিনরকমভাবে পরলেই কেল্লা ফতে। কড়িও খসবে কম, আবার দর্শনেও আসবে বৈচিত্র্য।

August 28, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এক শাড়িতে পুজোর তিনদিন! এও কি সম্ভব? শুনতে অবাস্তব মনে হলেও তাকেই সম্ভব করে তুলেছেন বিষ্ণুপুরের বালুচরিশিল্পী অমিতাভ পাল। একই শাড়িতে লুকিয়ে রয়েছে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর সাজ। তিনদিন তিনরকমভাবে পরলেই কেল্লা ফতে। কড়িও খসবে কম, আবার দর্শনেও আসবে বৈচিত্র্য। শুধু যিনি পরবেন, তাঁকে একটু ট্র্যাডিশনাল ধ্যান-ধারণা থেকে বেরতে হবে, এই যা!

কিন্তু কীভাবে সম্ভব হল এই ‘অসম্ভব’? শহরের কৃষ্ণগঞ্জে শিল্পীর বাড়িতে যেতেই উন্মোচিত হল রহস্য। আসলে অমিতাভবাবু টানা ১২ হাতের শাড়িকে দু’-টুকরো করে ফেলেছেন। একটি অংশ উত্তরীয়, অপর অংশটি ঘের। দু’টি পার্টেই নানা নকশা আঁকা। দু’টিতেই রয়েছে আঁচল আর পাড়। দুই অংশকে ল্যাহেঙ্গার মতো করে পরা যাবে। আবার শাড়ি হিসেবেও গায়ে তোলা যাবে অনায়াসে। শুধু তাই নয়, উত্তরীয় এবং ঘের, দুই অংশই জায়গা বদল করতে পারবে। অর্থাৎ যে-কোনও অংশকে নীচে এবং যে-কোনও অংশকে উপরে পরা যাবে।

শিল্পী জানালেন, খণ্ডিত অবস্থায় দেখলে দু’টো কাটা পিস বলে মনে হবে। কিন্তু গায়ে জড়ালেই নারী হয়ে উঠবে অপরূপা। অসমে মহিলাদের কাছে মেখলা ব্যাপক জনপ্রিয়। তারই আদলে তৈরি হওয়ায় নাম দেওয়া হয়েছে ‘বালুচরি মেখলা’। দাম ৭হাজার থেকে ১২হাজার টাকা।

অমিতাভবাবু বলেন, গত দু’বছর ধরে এক লক্ষ, দেড় লক্ষ টাকা দামের বালুচরি তৈরি করেছি। এবারে করোনা আবহে মানুষের হাতে টাকা নেই। তাছাড়া পুজোর উৎসাহেও কিছুটা ভাটা পড়েছে। সব মিলিয়ে এবার মানুষের হাতে টাকা কম। সেকথা চিন্তা করেই কম দামের মধ্যে অভিনব কিছু করার পরিকল্পনা করেছিলাম। তা বাস্তবায়িত করতে পেরেছি। ছকে বাঁধা ১২ হাতের শাড়িকে দ্বিখণ্ডিত করে দিয়েছি অসমিয়া মেখলার আদল। শাড়ি হিসেবেও যেমন পরা যাবে, তেমনই পরা যাবে ল্যাহেঙ্গার স্টাইলে।

বালুচরি মেখলা শাড়ির খণ্ডিত দুই অংশে রয়েছে চারটি রং। ঘিয়ে, সাদা, কালো ও রানি। আঁচল ও পাড়ে রয়েছে হাতি, ফুল, রথের অপূর্ব সব নকশা। দু’টি আলাদা আলাদা অংশ হাতে নেওয়ার পর মহিলাদের মনে হতে পারে, কীভাবে পরব? কিছুটা খুললেই অবশ্য ধন্দ কেটে যাবে।

শিল্পী জানালেন, এমনিতে বালুচরি শাড়ি পরা একটু কঠিনই। তার জন্য অনেক সময়ই বাঙালি মেয়েরা একে অন্যের সাহায্য নেন। কিন্তু ‘বালুচরি মেখলা’ দ্বিখণ্ডিত হওয়ায় সেই কাজটা এবার খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। একা একা যে-কেউ পরে নিতে পারেন।

পুজো মানেই তো রোজ নতুন শাড়ি। সেই সনাতনী চিন্তাভাবনা থেকে কি সহজে বেরনো সম্ভব? অমিতাভবাবুর কথায়, সম্ভব। কারণ এতো রোজ নতুন কিছু পরাই হচ্ছে। তাই ল্যাহেঙ্গা দিয়েই শুরু হতে পারে সপ্তমী। অষ্টমীর দিন ল্যাহেঙ্গা বদলে যাক শাড়িতে। আর উত্তরীয় এবং ঘের, জায়গা বদল করে নিক নবমীর দিন। তাহলেই কামাল! শিল্পী বলেন, শুধু পুজো নয়। বিয়েবাড়ি বা অন্য যে-কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেও মহিলারা সেজে উঠতে পারেন বালুচরি মেখলায়। এক খরচে তিনদিন! সৌজন্যে বিষ্ণুপুর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen