বনধ-ধর্মঘটে কত টাকা ক্ষতি হয় রাজ্যের? দেখে নিন পরিসংখ্যান
২০১১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর গড়ে ১০ টি বনধ হলে রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ পৌঁছে যায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকায়
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:১০: বুধবার ৯ জুলাই দেশ জুড়ে ভারত বনধের ডাক দিয়েছে দশটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে কয়লা খাদান, হাইওয়ে নির্মাণ, ইনস্যুরেন্স পরিষেবা মিলিয়ে প্রায় ২৫ কোটি কর্মী এই বনধের অংশ নিতে পারেন। এর ফলে দেশ জুড়ে জনজীবন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বনধের (Bandh) দিনও স্বাভাবিক নিয়মে খোলা থাকবে রাজ্য সরকারের সমস্ত দপ্তর। কোনও ছুটি নয়, কর্মীদের বাধ্যতামূলক ভাবে হাজিরা দিতে হবে— স্পষ্ট নির্দেশ জারি করেছে নবান্ন (Nabanna)।
বাম জমানা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক বার আক্ষেপের সুরে নাকি বলেই ফেলেছিলেন যে তার কাছে এটা দুর্ভাগ্যজনক যে তিনি এমন একটা দলে আছেন, যারা বনধ সমর্থন করে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মনাশা বনধ ব্যর্থ করার কোনও চেষ্টাই বাকি রাখেননি।
রাজনৈতিক দলগুলো নানান বিষয়ের দোহাই দিয়ে যে বনধ ডাক, সেই কর্মনাশা দিনে বিশেষ করে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের রুটিরুজি মার খায়। বন্ধের ফলে অর্থনীতির ক্ষতি যথেষ্ট গভীর। কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের ২০০৯ সালের তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে কোনও শিল্প সংক্রান্ত সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও সারা ভারতজুড়ে নষ্ট হয়েছে প্রায় ৬৮ লক্ষ ৩৫ হাজার শ্রমদিবস। তার মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই ৫৮ লক্ষ ৫৪ হাজার শ্রমদিবস নষ্ট হয়।
ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স (ICC)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে বামফ্রন্টের ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধে রাজ্যের রাজস্বের ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ৫০০ কোটি টাকা! ২০১১ সালের তথ্য বলছে, প্রতি ১২ ঘণ্টা বনধে ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮০৪ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে বাম এবং বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা ক্ষতির আন্দাজ করেছিলেন ICC-র তৎকালীন আধিকারিক।
২০১১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর গড়ে ১০ টি বনধ হলে রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ পৌঁছে যায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকায়। যা উন্নয়ন খাতে বাংলার বাজেট বরাদ্দ এবং রাজস্ব ঘাটতির চেয়ে বহু গুণ বেশি।