উত্তাল বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ, মৃত্যু বেড়ে ৩, হাসিনার ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে ইউনুসের ছাত্ররা
বুধবার গোপালগঞ্জে দেখা গিয়েছে উল্টো চিত্র। সেনা বাহিনী অতি তৎপর হয়ে বিক্ষোভকারীদের দেহ লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪২: ফের উত্তাল বাংলাদেশ। বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জে একটি জন সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রেদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পাশাপাশি তাঁরা মুজিবের কবর ভাঙার কর্মসূচিরও ডাক দিয়েছিল। শেখ হাসিনার পতন উদযাপনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। আওয়ামি লিগ প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে তথাকথিত বিপ্লবী ছাত্ররা। অভিযোগ, সভামঞ্চে হামলা চালিয়ে তাঁদের মারধর করে আওয়ামি নেতারা (Bangladesh Awami League)। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসে সেনা ও পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত তিন। বুলেটের জখম নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৯।
যদিও আওয়ামী লিগের এখনও পর্যন্ত তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে দলের তরফে দাবি করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, আরও অন্তত ৫০ জন গুলিবিদ্ধ। তাদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন বুধবার রাত আটটা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কার্ফু জারি করা হয়েছে। মনে।করা হচ্ছে আওয়ামী লিগের নেতা কর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় করা হবে। তারা যাতে এলাকা ছাড়তে না পারে সে জন্যই কার্ফু জারি করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হল। বুধবার দুপুরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।
এদিকে, তিন কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামানকে অপরাধী মনে করছে আওয়ামী লিগ। গোলমাল চলার সময় সেনা ছিল পুলিশের তুলনায় বেশি সক্রিয়। দেহ লক্ষ্য করে গুলি করে সেনা জওয়ানেরা। গত বছর গণ অভ্যুত্থানের সময় সেনার ভূমিকা ছিল ভিন্ন। যে কোনও অবস্থাতেই তারা দেশবাসীর পাশে থাকবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন সেনা প্রধান ওয়াকার উজ জামান।
বুধবার গোপালগঞ্জে দেখা গিয়েছে উল্টো চিত্র। সেনা বাহিনী অতি তৎপর হয়ে গুলি চালায়। এক অফিসারকে বলতে শোনা যায় বিক্ষোভকারীদের দেহ লক্ষ্য করে গুলি করতে।
আজ ‘জুলাই গণ অভ্য়ুথ্থানে’র এক বছর পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশে আজ এই দিনটি ‘জুলাই শহিদ দিবস’ হিসাবে পালিত হচ্ছে। গত বছর এই সময়ই হাসিনার পতনের সূচনা হয়েছিল। এই কারণে এবছরের ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করে দলটি।
এই পদযাত্রাকে ঘিরে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রাকিবুল হাসান। সেখান থেকে ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার কংশুরে ইউএনওর গাড়িতে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর গাড়ির চালক আহত হন। এরপর ফের এনসিপির নেতারা সভা করতে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তাঁদের অভিযোগ, ২০০-৩০০ জন এসে হামলা চালায়। সকলেই আওয়ামির কর্মী সমর্থকরা। তাঁরা চারদিক থেকে এনসিপির নেতা-কর্মী ও পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়।