উত্তাল বাংলাদেশ: সংবাদপত্রের অফিসে আগুন, সাংবাদিক খুন, হামলা ভারতীয় উপদূতাবাসেও

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৫৫: ফের উত্তাল ওপার বাংলা। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই অশান্ত বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের দুই সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেলি স্টার’-র দপ্তরে হামলা চলে। অভিযোগ, দুই সংবাদপত্রের দপ্তরে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দমকল পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, তারপর আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করা হয়। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে। অভিযোগ, খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করেছে উত্তেজিত জনতা। ময়মনসিংহে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে।
আরও খবর মিলেছে, শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়িতে ফের ভাঙচুর চালানো হয়েছে। রাজশাহীতে মুজিবের আর একটি বাড়িতে এবং আওয়ামী লিগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের ভারতীয় উপদূতাবাস লক্ষ্য করে ঢিল-পাটকেল ছোড়া ও হামলার অভিযোগ উঠেছে। রাত থেকে উপদূতাবাসের সামনে অবস্থানে বসেছেন ছাত্র-যুবদের একাংশ। বিক্ষোভকারীদের মুখে কেবল শেখ হাসিনা এবং ভারত-বিরোধী স্লোগান।
বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঢাকার শাহবাগে জমায়েত করেছিলেন বহু মানুষ। এরপর বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেলি স্টার’-র কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আটকে পড়েন সাংবাদিকেরা। ‘দ্য ডেলি স্টার’-র মহিলা সাংবাদিক জাইমা ইসলাম সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, তিনি ঠিক করে শ্বাস নিতে পারছেন না। খুব ধোঁয়া। ভিতরে রয়েছেন। রাত ২টো নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে সব সাংবাদিককে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আজ, শুক্রবার দুই সংবাদপত্রের কোনও মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হবে না। ডিজিটাল সংস্করণের কাজও প্রায় বন্ধ রয়েছে।
হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর যে আন্দোলন হয়েছিল, তার অন্যতম নেতা ছিলেন হাদি। ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরনো পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। ইউনূস প্রশাসনের অভিযোগ, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লিগের ছাত্র সংগঠনের কোনও কর্মী হাদির মাথায় গুলি করেন। চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর বাংলাদেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়। গভীর রাতেই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ইউনূস। সংযম বজায় রাখার আবেদন জানান।
ইউনূস ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, হাদির মৃত্যুতে শনিবার বাংলাদেশে শোকদিবস পালন করা হবে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। শুক্রবার বিশেষ নমাজ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
ওসমানের স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব গ্রহণ করবে সরকার, এমনটাই জানান অন্তর্বর্তী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান। আজ সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে হাদির দেহ বাংলাদেশে ফিরবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হাদির দেহ ফিরলে পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হতে পারে। শনিবার ঢাকায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন ইউনূস।