Bangladesh unrest: বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন! জীবন্ত দ*গ্ধ হয়ে মৃত্যু ৭ বছরের কন্যার আশঙ্কাজনক ৩
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:১৪: বাংলাদেশে ফের নৃশংসতার সাক্ষী থাকল সাধারণ মানুষ। চলমান অস্থিরতার মধ্যেই এবার বিএনপি (BNP) নেতার বাড়িতে দরজায় তালা লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শুক্রবার গভীর রাতের এই ভয়াবহ ঘটনায় জীবন্ত দ*গ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে মাত্র সাত বছরের এক শিশুকন্যার। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই বিএনপি নেতা এবং তাঁর আরও দুই নাবালিকা কন্যা। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ্মীপুর জেলায় (Lakshmipur District)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আক্রান্ত বিএনপি নেতার নাম বেলাল হোসেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের বিএনপির সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক। শুক্রবার রাতে বেলাল এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক তখনই এই নৃশংস হামলা চালানো হয়। অভিযোগ, রাত ২টো নাগাদ একদল দুষ্কৃতী বাড়ির সদর দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর পেট্রল ঢেলে পুরো বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আগুন মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ঘুম ভেঙে যায় পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ থাকায় কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেননি। আগুনের লেলিহান শিখায় ঘটনাস্থলেই পুড়ে মৃত্যু হয় বেলালের সাত বছরের ছোট মেয়ে আয়েশা আক্তারের। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং দমকলে খবর দেন। পরে দমকল ও স্থানীয়দের সহায়তায় জখমদের উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন বেলাল হোসেন এবং তাঁর অপর দুই কন্যা- বীথি আক্তার এবং স্মৃতি আক্তার। ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বীথি ও স্মৃতির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকার ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’-এ স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বেলাল হোসেন বর্তমানে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বিএনপি নেতার বসতভিটা।
এই বর্বরোচিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে দরজায় তালা দিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এটি কোনও সাধারণ দুর্ঘটনা নয়, এটি ঠান্ডা মাথায় খুন। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা মহম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। কেউ পরিকল্পিতভাবে এই নাশকতা চালিয়েছে কি না, পুলিশ তা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির (Osman Hadi) মৃত্যুর খবর বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। সরকারি উদ্যোগে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর মৃত্যুর পরই দেশজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক তাণ্ডব। ক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক সরকারি ভবন এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়। রেহাই পায়নি সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোও। ‘প্রথম আলো’, ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর দফতর এবং ছায়ানট ও উদীচীর মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই বিএনপি নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও শিশু মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। শনিবার ওসমান হাদির শেষকৃত্য ঘিরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।