বাগডোগরার সেনা ছাউনিতে বাংলাদেশি গুপ্তচর! প্রশ্নের মুখে সীমান্ত নিরাপত্তা
![]()
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:১০: উত্তরবঙ্গের (North Bengal) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেনা ঘাঁটি বাগডোগরার ব্যাঙডুবি (Bagdogra Army Camp) এলাকায় ফের অনুপ্রবেশ কাণ্ড। সেনা ছাউনির ভেতরে রাস্তার কাজের সুপারভাইজার পরিচয়ে প্রবেশ করে এক বাংলাদেশি নাগরিক। পরে তার কাছ থেকে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিচয়পত্র উদ্ধার হতেই সন্দেহ দানা বাঁধে। সেনা জওয়ানরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ধৃত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে বসবাস করছিল এবং তার বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ধৃতের নাম নন্দ মণ্ডল। বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার চাঁরিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে নন্দ। তারপর থেকেই জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) বসবাস করছিল। দালালের মাধ্যমে মোটা টাকার বিনিময়ে সে ভারতের জাল পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। স্থানীয় এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত সে, এবং সেই সূত্রেই সেনা ছাউনির রাস্তার কাজের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়।
বুধবার ছাউনিতে প্রবেশের সময় নিরাপত্তা পরীক্ষার মুখে পড়ে নন্দ। তার কাছ থেকে দুটি আলাদা পরিচয়পত্র-একটি ভারতের, অন্যটি বাংলাদেশের, উদ্ধার হতেই ফাঁস হয় পুরো ঘটনা। সেনা সূত্রে জানা গেছে, ধৃতের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কাগজপত্রও উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে, গত তিন দশকে একাধিকবার বাংলাদেশে যাতায়াত করেছে সে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাগডোগরা ও আশপাশের এলাকায় ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। প্রশ্ন উঠছে, উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে সুরক্ষিত সেনা ছাউনির নিরাপত্তা বলয় কীভাবে ভেদ করল এক অনুপ্রবেশকারী? সেনা ও নিরাপত্তা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ চলতি বছরের জুলাই মাসেও একই ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনি থেকে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে অনুপ্রবেশ ও গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার রাকেশ সিং জানিয়েছেন, “ধৃত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে সেনা জওয়ানরাই প্রথমে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। কীভাবে এবং কী উদ্দেশ্যে সে সেনা ছাউনিতে ঢুকেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে।”
সেনা আধিকারিকদের মতে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা (Security) ব্যবস্থার আরও কড়াকড়ি করা প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে বাগডোগরা থানার পুলিশ ও সেনার গোয়েন্দা বিভাগ। শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন একটাই, যদি দেশের অন্যতম সুরক্ষিত সেনা ছাউনিতেই অনুপ্রবেশ সম্ভব হয়, তবে সীমান্ত নিরাপত্তা আদৌ কতটা সুরক্ষিত?