শীতের রাতে হাসপাতালে বিডিও, দিলেন স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম ও কার্ড

রাজ্য সরকারের মানবিক পরিষেবাগুলি থেকে ব্লকের একজন বাসিন্দাও যাতে বাদ পড়ে না যান, সেটা দেখার জন্যই এই উদ্যোগ।

December 25, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ঘড়ির কাঁটায় তখন বুধবার রাত সাড়ে ১০টা। শীতের রাত। কালচিনির লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে ভর্তি অধিকাংশ রোগীই তখন লেপ কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়েছেন। অত রাতে সরকারি কর্মীদের নিয়ে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে সটান হাজির বিডিও প্রশান্ত বর্মন। রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের মধ্যে চোখাচুখি করতেই বিডিও  অভয় দিয়ে বললেন, ‘ভয় নেই। প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড আছে কি না সেটাই জানতে এসেছি।’ এত রাতে স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম নিয়ে হাসপাতালে বিডিও হাজির। তাজ্জব রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। জেলাজুড়ে চলছে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। দিনভর দম ফেলার সময় নেই সরকারি কর্মীদের। নাওয়াখাওয়ার সময়ও নেই। তাই স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন ফর্ম দিতে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছে যান তিনি। তাঁর কর্তব্যপরায়ণতা দেখে অবাক হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী থেকে রোগীরা। 

এদিন রাতে ওই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে খোঁজ নিয়ে বিডিও জানতে পারেন, চারজন প্রসূতি ও সন্তানসম্ভবা আরও ছ’জনের তখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই হয়নি। বেশিরভাগই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৯০০ ফুট উচ্চতায় বক্সা পাহাড়ের বাসিন্দা। যাঁদের পাহাড়ের চড়াই উতরাই পেরিয়ে সমতলে হাসপাতালে আসতে খুবই কষ্ট হয়। রাতেই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের ছোট অফিসে বসেই খোদ বিডিও ফাইল থেকে ফর্ম বের করে একে একে ১০ জন প্রসূতির স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম পূরণ করে হাতে হাতে তাঁদের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়ে দেন।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে হাতে হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়ে তখন আর আনন্দ ধরে না প্রসূতির।  বিডিওকে কী বলে ধন্যবাদ দেবেন কার্ড পাওয়া প্রসূতিরা, তখন বুঝতে পারছিলেন না। নীলমায়া ছেত্রী নামে এক প্রসূতি বলেন, সরকারি অফিসে ছুটতে হল না। ঝক্কিও পোহাতে হল না। ভাবতেই পারছি না হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এভাবে এত সহজে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পাব।

সন্তানসম্ভবা আর এক প্রসূতি বলেন, বিডিওর এই তৎপরতায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে মনের জোর অনেকটা বেড়ে গেল। আর বিডিও প্রশান্তবাবু? তাঁর বক্তব্য, আসলে সরকারি কাজের তো নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম হয় না। রাজ্য সরকারের মানবিক পরিষেবাগুলি থেকে ব্লকের একজন বাসিন্দাও যাতে বাদ পড়ে না যান, সেটা দেখার জন্যই এই উদ্যোগ। তাই বলে এত রাতে? বিডিও’র উত্তর, কোথায় রাত! 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen