দাগি প্রার্থীদের তালিকায় শীর্ষে বিজেপি

সব দল মিলিয়ে ৩৯ জন প্রার্থী হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে। ১১৩ জনের বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অপরাধের মামলা চলছে। তার মধ্যে চারজন ধর্ষণের মতো ঘটনায় অভিযুক্ত।

April 25, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রাজ্যের ৮ দফার ভোটে সব থেকে বেশি বিজেপি (BJP) প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের মামলা চলছে আদালতে। ৮ দফার ভোটে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ২১৩২। এর মধ্যে দুজনের হলফনামা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে অষ্পষ্ট থাকার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ বিশ্লেষণ করতে পারেনি। বাকি ২১৩০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫২৮ জন অর্থাৎ ২৫ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। এর মধ্যে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে ৪৩১ জনের মধ্যে। দলগত অবস্থান বিশ্লেষণ করে ইলেকশন ওয়াচ দেখেছে, বিজেপির ২৯৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৬৮ জনের (৫৭ শতাংশের) বিরুদ্ধে এক বা একাধিক ফৌজদারি মামলা রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের ২৯০ জন প্রার্থীর মধ্যে ১১৮ জনের (৪১ শতাংশ) বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলা আদালতে বিচারাধীন। সিপিএমের ১৩৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ৮১ জন (৫৮ শতাংশ) ও কংগ্রেসের ৯২ জনের মধ্যে ৩৫ জনের ( ৩৮ শতাংশ) মামলা রয়েছে। শতাংশের হিসেবে সিপিএমের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা বেশি। কিন্ত সংখ্যার বিচারে এই নিরিখে বিজেপি এক নম্বরে। সব দল মিলিয়ে ৩৯ জন প্রার্থী হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে। ১১৩ জনের বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অপরাধের মামলা চলছে। তার মধ্যে চারজন ধর্ষণের মতো ঘটনায় অভিযুক্ত।

গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মোট ১৯৬০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩৫৪ জন (১৮ শতাংশ) হলফনামায় জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের মামলা ছিল ২৯৪ জন বা ১৫ শতাংশের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত যে সব মামলায় ৫ বছর বা তার বেশি জেল হতে পারে, জামিন অযোগ্য অপরাধ, মহিলা ঘটিত অপরাধ সেগুলিকে গুরুতর অভিযোগের তকমা দেওয়া হয়। এবার বিজেপি-র ১৪৪ জন, সিপিএমের ১৩৯ জন, তৃণমূলের ৯৮ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের মামলা আছে। নির্বাচন কমিশন অভিযুক্তদের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে নানা নিয়ম চালু করলেও যেভাবে তাঁদের সংখ্যা বাড়ছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইলেকশন ওয়াচ। ফৌজদারি মামলা থাকা ব্যক্তিদের প্রার্থী করা হলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে এর কারণ লিখিতভাবে কমিশনকে জানাতে হয়। তাছাড়া দলের ওয়েবসাইটে এই তথ্য দেওয়া ও সংবাদপত্রে বাধ্যতামূলকভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানোর ব্যবস্থা কমিশন চালু করছে। তারপরও ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের ভোটে প্রার্থী হওয়া বাড়ছে। এব্যাপারে কমিশনের আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে দাবি করেছে সংস্থা।

সম্পদের নিরিখে ২১৩০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩৯৪ জন কোটিপতি (১৮ শতাংশ)। গত বিধানসভা নির্বাচনে কোটিপতি প্রার্থী ছিলেন ২৪৪ জন। সব থেকে বেশি ১৭৬ জন কোটিপতি প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের। তারপরে বিজেপি-র ১০২ জন কোটিপতি প্রার্থী আছেন। ৫ কোটি বা তার বেশি সম্পদ রয়েছে এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৭৪ জন। আবার ৮ জন প্রার্থী জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও সম্পদই নেই। ৩ জন প্রার্থী মাত্র ৫০০ টাকার সম্পদের উল্লেখ করেছেন।

শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে ৯৯৬ জন প্রার্থী পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ। স্নাতক বা তার বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে ১০৭২ জনের। ২৭ জন প্রার্থী শুধুমাত্র সাক্ষর। ১০ জন হলফনামায় জানিয়েছেন তাঁরা নিরক্ষর। মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা ২৪০ জন (১১ শতাংশ)। গতবার ১৯৮ জন মহিলা প্রার্থী ছিলেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen