চিকিৎসকদের হুমকি – হাসপাতালে ঢুকে BJP নেতা কৌস্তভ বাগচীর দাদাগিরি! মুখ্যসচিবের কাছে অভিযোগ চিকিৎসকদের
বারাকপুর ওয়ারলেস মোড় সংলগ্ন একটি মাল্টি স্পেশালিটি বেসরকারি হাসপাতালে। ঘটনার ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায় ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৩৪: ‘ডক্টরস ডে’-তেই চিকিৎসকদের হুমকি বিজেপি নেতার! হাসপাতালের মধ্যে চেঁচামেচি এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়—ঘটনার কেন্দ্রে বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী। এই ঘটনা ঘটেছে বারাকপুর ওয়ারলেস মোড় সংলগ্ন একটি মাল্টি স্পেশালিটি বেসরকারি হাসপাতালে। সোমবার রাতে ওই ঘটনার ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায় ।
ঘটনার সূত্রপাত এক রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে। বারাকপুরের বিজেপি কর্মী কার্তিক দাসের অসুস্থ বাবাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, চিকিৎসা শুরু না করে প্যাকেজ নিয়ে দর কষাকষি শুরু হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ আরও, অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বচসা ও উত্তেজনা।

এরপরই উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকলে সেখানে পৌঁছন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী। অভিযোগ, তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে চেঁচামেচি করেন, আঙুল উঁচিয়ে হুমকিও দেন। উপস্থিত বিজেপি কর্মীরা গোটা ঘটনা ভিডিও করে ফেলেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই ডক্টর ফোরামের পক্ষ থেকে মুখ্যসচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।
অন্যদিকে, গোটা ঘটনায় কোনও অনুশোচনা নেই কৌস্তভ বাগচীর। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, “রোগী মৃত্যুর ঘটনায় যেভাবে জনরোষ তৈরি হয়েছিল, আমি ছিলাম বলে হাসপাতাল ভাঙচুর হয়নি। চিকিৎসকরা মার খায়নি। হ্যাঁ উচ্চস্বরে কথা বলেছি ঠিকই, কিন্তু আমিই গণ্ডগোল থামিয়েছি। প্যাকেজ বোঝাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতটাই ব্যস্ত ছিল যে অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়া পরে সেটা যে পরাতে হবে সেই জ্ঞান ওদের ছিল না। এই ঘটনায় হাসপাতাল একে অপরের বিরুদ্ধে দোষ চাপাচ্ছিল, তার ভিডিও রয়েছে। আমি কোন হেনস্তা করিনি। নিজেদের দোষ ঢাকতে আবার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। যা করেছি তাতে আমি বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নই।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোগী আগেই একবার অ্যাটাক করেছিলেন। ভর্তি করানোর পর ফের অ্যাটাক হলে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ এবং রোগী পরিষেবা—সব মিলিয়ে নতুন করে চিকিৎসক মহলে প্রশ্ন উঠছে রাজনীতি কি ঢুকে পড়ছে হাসপাতালেও?