দলে এবং পরিষদীয় পরিসরে ক্রমেই কোণঠাসা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহল সহ একাধিক জেলার বিধায়কদের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী নির্দিষ্ট কয়েকজন এমএলএকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।

December 6, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

দলে এবং পরিষদীয় পরিসরে ক্রমেই কোণঠাসা হচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি বিধায়কদের একটা বড় অংশ ক্রমেই নাকি আস্থা হারাচ্ছেন তাঁর উপর। বাড়ছে ক্ষোভ। একইভাবে রাজ্য বিজেপির সংগঠনের অভ্যন্তরেও শুভেন্দুবাবুর কর্তৃত্ব খর্ব হচ্ছে। তারই ফল, আসন্ন কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে তাঁকে সক্রিয় ভূমিকায় আর দেখা যাচ্ছে না। গত ১৬ নভেম্বর কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোট নিয়ে শেষবার রাজ্য পার্টি অফিসে বৈঠক করেছিলেন শুভেন্দুবাবু। সেখানে দলের বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষ হাজির ছিলেন। বৈঠকে হাওড়ার এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপির এক রাজ্য পদাধিকারীর সখ্যের প্রসঙ্গ তোলেন বিরোধী দলনেতা। বিধানসভা ভোটে ওই জেলায় বিজেপির হতাশাজনক ফলাফলের কারণ হিসেবেও এই কারণ দর্শান তিনি। পরদিন হাওড়া (সদর) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে নারদ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার প্রসঙ্গ তুলে দল থেকে বহিষ্কৃত হন। তারপরই বিরোধী দলনেতা নিজেকে পুরভোট থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। কলকাতা পুরভোটের জন্য দল ১৭ জন বিধায়ককে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি। তাঁদের প্রশ্ন, ভোটের বাকি ১৩ দিন। আমাদের দলনেতা কোথায়?


উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহল সহ একাধিক জেলার বিধায়কদের অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী নির্দিষ্ট কয়েকজন এমএলএকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। বিশেষ করে প্রথমবারের বিধায়কদের সিংহভাগই নিজেদের উপেক্ষিত বলে মনে করতে শুরু করেছেন। বিধায়কদের একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা খুব একটা কথাবার্তাও বলেন না। এ প্রসঙ্গে বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘কয়েকজন বিধায়ক আমাকে বিষয়টা জানিয়েছেন। এটা ঠিক, বিরোধী দলনেতার ঘরে কয়েকজন বিধায়ক বসে থাকেন। উনি তো তাঁদের উঠে যেতে বলতে পারেন না।’ মনোজবাবুর দাবি, ‘শুভেন্দুবাবু সবাইকে নিয়ে চলতে ভালোবাসেন। এটা কোনও সমস্যা নয়। তেমন হলে আমি নিজে ওঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের আলোচনায় বসিয়ে দেব।’ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘আমাদের অনেক বিধায়ক প্রথমবার বিধানসভার সদস্য হয়েছেন। তাই অনেকেই অসহায় বোধ করেন। বিরোধী দলনেতা বিজেপি পার্টিতে নতুন এসেছেন। পরিষদীয় বিষয়গুলি স্রেফ উনি দেখেন। দলীয় সংগঠনের ওঁর কোনও দায়িত্ব নেই। হতেই পারে, তিনি হয়তো অভিজ্ঞ কয়েকজন বিধায়ককে নিয়ে বিধানসভার রণনীতি তৈরি করেন।’ তবে দল বিধায়কদের আশু এই সমস্যার সমাধান করবে বলেও জানিয়েছেন দিলীপবাবু। কলকাতা পুরভোটে শুভেন্দুবাবুর ভূমিকা নিয়েও মুখ খুলেছেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘হতে পারে কলকাতা ওঁর কার্যক্ষেত্র নয়। কলকাতার রাজনীতি উনি করেননি। তাই হয়তো উনি পুরভোটে সময় দিচ্ছেন না।’ তবে পার্টির প্রচারে সভা-সমিতিতে বিরোধী দলনেতা অবশ্যই হাজির থাকবেন বলেও জানিয়েছেন মেদিনীপুরের বিজেপি এমপি। গোটা বিতর্ক প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবুর প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। লিখিত বার্তা পাঠানো হলেও জবাব মেলেনি বিরোধী দলনেতার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen