নতুন করে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে বাংলা, রেশন দোকানে মোদীর ছবি নেই, তাই মিলবে না টাকা!
দেশের সব রেশন দোকানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি এবং গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার পোস্টার লাগাতে হবে। আর সেটা না করলে? উত্তর তৈরি আছে—টাকা মিলবে না।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: লোকসভা নির্বাচনের আবহে সব দিক থেকেই প্রচারে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। তাদের সময়কালে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে প্রচার করে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা চালাবে গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ ব্র্যান্ডিং করতে হবে নরেন্দ্র মোদীর। সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তিতে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, দেশের সব রেশন দোকানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি এবং গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার পোস্টার লাগাতে হবে। আর সেটা না করলে? উত্তর তৈরি আছে—টাকা মিলবে না।
এই কারণেই এখন নতুন করে বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে বাংলাকে। কেন্দ্রের ফরমান অনুযায়ী রেশন দোকানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি রাখা বাধ্যতামূলক। সেইসঙ্গে প্রচারমূলক আরও কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজ্যগুলির জন্য। অর্থাৎ, কেন্দ্রের ভাগ যাই হোক না কেন, শর্ত একমুখী—ছবি দিতে হবে। এই ‘নির্দেশিকা’ কার্যকর করা থেকে বেঁকে বসার জন্যই ধান কেনা খাতে বাংলার প্রাপ্য ৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আটকে দিয়েছে কেন্দ্র। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ নিজেই জানিয়েছেন, ‘২০২২-২৩ আর্থিক বছরের জন্য কেন্দ্রের কাছে বকেয়া আছে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের প্রাপ্য প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি। এই পুরো অঙ্কটাই আটকে রেখেছে মোদী সরকার।’
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা রাজ্যের ৬ কোটি রেশন গ্রাহকের জন্য ও দু’টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালাতে ‘সেন্ট্রাল পুল’ থেকে চাল সরবরাহ করা হয়। রাজ্য সরকার চাষিদের থেকে ধান কিনে চাল উৎপাদন করে এবং সেন্ট্রাল পুলে সরবরাহ করে। সেখানে চাল সরবরাহের পর উৎপাদনের জন্য নির্ধারিত হারে খরচ রাজ্য সরকারকে মিটিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই টাকার একটা বড় অংশ স্রেফ আটকে রাখা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘টাকা আটকে রাখাটাই নীতিবিরুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে আমরা চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনে চাল উৎপাদন করি। সেই টাকা না পাওয়া গেলে আর্থিক দায় চাপে রাজ্য সরকারেরই উপর। ইচ্ছে হলেই কেন্দ্র টাকা আটকে দিতে পারে না।’ অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগাতে রাজি না হওয়ার জন্য রাজ্যকে শাস্তি দিতেই কেন্দ্র এই টাকা আটকে রেখেছে। এটা বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরাও জানতে পেরেছি।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রেতাদের রেশনের খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহের জন্য বিশেষ ধরনের প্লাস্টিকের ব্যাগ দেওয়া হবে। লোকসভা ভোটের আগেই এই ব্যাগ বিলি হবে। জানা গেছে, এক একটি ব্যাগের ধারণ ক্ষমতা থাকবে ১০ কেজি। ব্যাগগুলির গায়েও প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবি থাকবে। এমনকী কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সম্পর্কেও বিস্তারিত লেখা থাকবে ব্যাগের গায়ে।