সুরাটের সস্তার শাড়ি ছেয়ে গেছে বাজার, কদর কমছে বাংলার তাঁতিদের
এই টগর-গোলাপ কিন্তু ফুল নয়। তাহলে কী? আসলে গুজরাটের সুরাট থেকে ১৫০ টাকায় শাড়ি আমদানি করা হয়েছে। যার নাম টগর-গোলাপ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৫০ টাকায় বিকচ্ছে টগর-গোলাপ। পাঁচ বছরের রঙের গ্যারান্টিও রয়েছে। এ কথা শুনেই দোকানটিতে বেড়েছে ভিড়। দোকানে ক্রেতার ভিড় দেখলে চোখ কপালে জোগাড়। তবে আসল রহস্য অন্য জায়গায়। এই টগর-গোলাপ কিন্তু ফুল নয়। তাহলে কী? আসলে গুজরাটের সুরাট থেকে ১৫০ টাকায় শাড়ি আমদানি করা হয়েছে। যার নাম টগর-গোলাপ। পুজোর আগে টেকসই রং ও সস্তা দামে শাড়ি পেয়ে খুশি ক্রেতারাও।
শুধু টগর-গোলাপ নয়, সুরাটের বিভিন্ন সস্তার শাড়ি দখল করেছে বাংলার বাজার। যার ফলে কদর কমছে এ রাজ্যের তাঁতিদের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মধ্যে সর্বাধিক তাঁতি রয়েছে গঙ্গারামপুর কেন্দ্রিক। গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের করুণ দশা কোনওরকমে শিবরাত্রির সলতের মতো টিম টিম করে জ্বলছে। দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে গঙ্গারামপুরের বোরডাঙ্গি এলাকার তাঁতিরা হ্যান্ডলুম টাঙ্গাইল শাড়ি ও অল্পবয়স্ক মেয়েদের জন্য অসমীয়া লেহেঙ্গা তৈরি করছেন। গঙ্গারামপুরের তাঁতিরা পুজোকে সামনে রেখে রকমারি টাঙ্গাইল ও হ্যান্ডলুম শাড়ি তৈরি করলেও সেভাবে পাইকারি শাড়ি বিক্রি না হওয়ায় তাঁরা হতাশ।
তাঁতিদের অভিযোগ, পুজোর আগেই গুজরাতের সুরাটের কাপড় মিলের শাড়ি খুব অল্প দামে বিক্রি হওয়ায় তাঁতের তৈরি হ্যান্ডলুম শাড়ির বাজার পড়েছে। পুজোর আগে শাড়ি বিক্রি না হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে তাঁতিপাড়ায়। তাই হ্যান্ডলুম তাঁত তুলে দিতে চাইছেন তাঁতিরা। একটা সময় ছিল যখন পুজোর আগে গঙ্গারামপুরের তাঁতিরা নাওয়াখাওয়া ভুলে শাড়ি বুনতেন। তাঁত বোনার শব্দে মুখবিত হতো চারপাশ। বর্তমানে ঠেঙ্গাপাড়া, মহারাজপুর, বোরডাঙ্গিতে কিছু তাঁতি তাঁত চালাচ্ছেন। বাকিরা তাঁত বন্ধ করে অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। পুজোর মতো বড় উৎসবে জেলার তাঁতিদের কাপড়ের অর্ডার কার্যত না হওয়ায় তাঁত শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু গঙ্গারমাপুরে নয় নদীয়ার শান্তিুরের তাঁতিদেরও একই অবস্থা।