BJP শাসিত অসমে আক্রান্ত বাঙালি ফেরিওয়ালা, বাংলাদেশি সন্দেহে মার মুর্শিদাবাদের যুবককে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:০০: ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলি রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য। রুজিরুটির টানে ভিন রাজ্যে গিয়ে তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশি সন্দেহ তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এবার বিজেপি শাসিত অসমে অত্যাচারিত হলেন বাঙালি ফেরিওয়ালা।
শনিবার রাতে কাছাড় জেলার শিলচর হাসপাতাল রোডের সামনে আক্রমণের কবলে পড়লেন মুর্শিদাবাদের সূতির নুরপুরের বাসিন্দা রিঙ্কু শেখ। বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁকে মারধর করে অসমের কিছু যুবক। রবিবার শিলচরের রাঙিরখারি থানায় রিঙ্কু অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মুসলমান হওয়াটাই কি অপরাধ? নাকি কাজ করে খাই, এটা অপরাধ।’’
নির্যাতিত জানিয়েছেন, রাতে সিভিল হাসপাতাল ট্রাফিক পয়েন্টের কাছে দু’জন অপরিচিত ব্যক্তি ‘বাংলাদেশি পেয়ে গিয়েছি’ বলতে বলতে তাঁকে দাঁড় করায়। বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করেই মারতে শুরু করে। মুর্শিদাবাদে বাড়ি বলায় তারা বলে বাংলাদেশি। হামলাকারীরা ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। দশ-বারো জন জড়ো হয়ে রিঙ্কুর গোপনাঙ্গে, মুখে লাথি মারে। বাইক ছিনিয়ে নেয়। প্রাণ বাঁচাতে বাইক ফেলেই পালিয়ে যান রিঙ্কু। আগেও অসমের বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশি সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বাঙালি শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে ইতিমধ্যেই। অভিযোগ, পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। তাই এমন হামলার ঘটনা বেড়েই চলেছে।
অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের আরও এক যুবক ওড়িশায় আক্রান্ত হয়েছেন। সামশেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ওড়িশার ঝাড়সুগুড়াতে হকারি করতে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ, তাঁকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ানো হয়। তিনি ওড়িশার ঝাড়সুগুড়ায় ঘুরে ঘুরে পোশাক বিক্রি করেন। অভিযোগ, রবিবার স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তাঁর পথে আটক ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘গোমাতা কি জয়’ বলতে বাধ্য করে। গো-মাংস কেন খাওয়া হয়, তার জবাব চায়। ফেরিওয়ালা জানান, গো-মাংস খান না তিনি। বেশ কিছুক্ষণ হেনস্তার পর, হামলাকারীরা তাঁকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। আতঙ্কে তিনি বাংলায় ফিরে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারম্যান তথা সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কিছুদিন বাংলা ভাষাভাষীদের উপর অত্যাচার বন্ধ ছিল। কিন্তু আবার আমাদের কাছে খবর আসছে, বিজেপি শাসিত ওড়িশা, অসমে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হচ্ছে।’’ সাংসদের প্রশ্ন, ‘‘বাংলায় কথা বললে, সেই ব্যক্তিকে মারবে কেন? এই অধিকার কে দিয়েছে?’’