ভূকম্প মাপার নতুন স্কেল বাঙালির

দাসের আবিষ্কৃত এমডব্লিউজি ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে গতিতে যাওয়া পি বা চাপ তরঙ্গকে নিখুঁত পরিমাপ করে।

December 21, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

থরথরিয়ে কাঁপছে ঘর, চেয়ারটেবিল। কাঁপুনি থামলেই টিভিতে চোখ, কম্পনমাত্রা কত?  এখনও সাধারণত সেই মাত্রা রিখটার স্কেলেই প্রকাশ করা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ৮৪ বছরের পুরনো রিখটার স্কেলের জায়গা এ বার নিতে চলেছে আরও নিখুঁত এক স্কেল (new scale)। যার নাম ‘দাস ম্যাগনিচ্যুড স্কেল’ (এমডব্লিউজি)। এক বাঙালির নেতৃত্বে তৈরি সেই স্কেলেই এখন পৃথিবীর কাঁপুনি মাপা হচ্ছে।

আদতে অসমের ঢেকিয়াজুলির বাসিন্দা, ভূকম্প (Earthquake) বিশেষজ্ঞ রঞ্জিত দাস বর্তমানে গবেষণা ও কাজ করেন চিলির ন্যাশনাল ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সেন্টারে। তিনি জানান, ভূমিকম্পের নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ কম্পাঙ্ক পরিমাপের ক্ষেত্রে ১৯৭৯ সালেই এসে গিয়েছিল জাপানের হিরু কানামোরি ও আমেরিকার টমাস হ্যাঙ্কসের আবিষ্কৃত মোমেন্ট ম্যাগনিচ্যুড স্কেল বা এমডব্লিউ। কিন্তু সেই রিখটার স্কেল নামই প্রচলিত থেকে যায়।

দাসের আবিষ্কৃত এমডব্লিউজি ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে গতিতে যাওয়া পি বা চাপ তরঙ্গকে নিখুঁত পরিমাপ করে। রিখটারের মাত্রা মাঝারি ভূকম্পে প্রামাণ্য হলেও বড়ূ কম্পনের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নয়। ‘সিসমোলজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকা’ জার্নালে দাস ও তাঁর সহযোগী বিজ্ঞানী মুকুটলাল শর্মা, দীপঙ্কর চৌধুরী, হংসরাজ ওয়াসন ও গ্যাব্রিয়েল গনজালেজ়-এর গবেষণা ও উদ্ভাবনের কথা প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭৬ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত হওয়া ২৫,৭০৮টি ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে ৭৬ শতাংশ কম্পন থেকে উদ্ভুত শক্তির মাপ এমডব্লিউজি পরিমাপের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। যেখানে এমডব্লিউয়ের সঙ্গে মিলেছে মাত্র ২৪ শতাংশ।

দাস বলেন, এমজিডব্লিউ কম্পনশক্তির পর্যালোচনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করবে কারণ পি-তরঙ্গের প্রথম থেকেই দ্রুত কম্পনমাত্রা পরিমাপ করতে পারে এই স্কেল। কম্পনের উচ্চ ও নিম্ন তরঙ্গের নিখুঁত পরিমাপের মাধ্যমে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির আন্দাজ দিতে পারে। তিনি বোঝান, ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সুমাত্রায় যে ভূমিকম্প হয়েছিল তার কম্পনমাত্রা এমডব্লিউ স্কেলে ছিল ৯.০। কিন্তু এমজিডব্লিউ স্কেলে তা ছিল ৯.১। বড়় কম্পনের ক্ষেত্রে এই .১ ভগ্নাংশের হিসেবও কম কথা নয়, কারণ এক ইউনিট ম্যাগনিচ্যুড বাড়়ার অর্থ নির্গত শক্তি ৩২ ধাপ বৃদ্ধি পাওয়া। ভূকম্পপ্রবণ এলাকার মানচিত্র তৈরির ক্ষেত্রেও নতুন স্কেল অত্যন্ত কার্যকর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen