BJP শাসিত ওড়িশায় ফের পিটিয়ে খুন বাঙালি শ্রমিককে, গুরুতর আহত আরও দুই
Authored By:
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:০০: ওড়িশায় বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিককে আবারও পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার সম্বলপুর জেলার শান্তিনগর এলাকায়। পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে আর ফেরা হল না বাড়িতে। অভিযোগ, বাংলাদেশি সন্দেহে মুর্শিদাবাদ জেলার এক যুবককে পিটিয়ে মারা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম জুয়েল রানা। বছর একুশের জুয়েল রানার বাড়ি সুতি থানার চক বাহাদুরপুর গ্রামে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশি সন্দেহে আরও দুজনকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত হয়ে ওড়িশার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন মুর্শিদাবাদ জেলার আরও দুই যুবক। তাঁদের নাম পলাশ শেখ এবং আমির শেখ। সুতি থানার সাজুর মোড় এবং দিয়ার শোভাপুর এলাকায় বাড়ি তাঁদের।
জানা গিয়েছে, দিন চারেক আগে মুর্শিদাবাদ থেকে ওড়িশার সম্বলপুর এলাকায় একটি বহুতল নির্মাণের জন্য রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন জুয়েল রানা। তাঁর সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ, সুতি এবং অন্য কয়েকটি এলাকার আরও কয়েকজন যুবক রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
বুধবার রাত ৯ টা নাগাদ ওড়িশার কয়েকজন যুবক শান্তিনগর এলাকায় জুয়েল এবং মুর্শিদাবাদের আরও কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক যে বাড়িতে থাকতেন সেখানে চড়াও হন। অভিযোগ, এরপর তাঁরা জুয়েল এবং মুর্শিদাবাদের বাকি পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে তাঁদের ভারতীয় হওয়ার নথি দেখতে চান।
জুয়েল এবং মুর্শিদাবাদের অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকদের পোশাক দেখে ওড়িশার ওই যুবকেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেন। অভিযোগ, আচমকা লাঠি এবং অন্যান্য জিনিস নিয়ে ওড়িশার সাত-আট জন যুবক মুর্শিদাবাদের শ্রমিকদের বেধড়ক মারধর করেন। ওড়িশা পুলিশ জুয়েল এবং আরও কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিককে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় সম্বলপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জুয়েলকে সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আমির এবং পলাশ, বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় ওড়িশা পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। জুয়েলের মৃত্যু সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এলাকায় অত্যন্ত ভাল ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন জুয়েল। তাঁকে যে বাংলাদেশি সন্দেহে এইভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলায় শোকে কাতর গোটা এলাকা।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাস ধরে বাংলা ভাষাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশার বিভিন্ন প্রান্তে হামলার শিকার হতে হয়েছে। কয়েক’শ শ্রমিক প্রাণ ভয়ে ওড়িশা থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সম্বলপুর, সুন্দরগড় এবং ঝারসুগুদা জেলায় বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকরা সমস্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ওড়িশার সম্বলপুরের জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আবেদন জানাবেন তাঁরা। ওড়িশা সরকার যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারে তাহলে সকলে মুর্শিদাবাদ জেলায় ফিরে চলে আসবেন বলেও জানান তাঁরা।