বাংলার ঐতিহ্য রক্ষা করবে বাংলার মেয়ে – প্রচার তৃণমূলের

সবমিলিয়ে বারো ধরনের ব্যানার-ফ্লেক্স। প্রতিটিতে রয়েছে মমতার হাসিমাখা মুখ।

February 26, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

 খেলা হবে!(Khela Hobe) ‘বাংলার নিজের মেয়ে’র(Bangla Nijer Meyekei Chay) সঙ্গে মাঠ-ময়দানে বঙ্গের সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের দ্বাদশ ‘ধারক’কে নামাচ্ছে তৃণমূল(TMC)। খেলা হবে! ক’দিন ধরেই মাঠ দাপাচ্ছে বাংলার গর্ব রসগোল্লা। এবার একে একে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, বেলুড় মঠ, শান্তিনিকেতন, হাওড়া ব্রিজ, কলকাতার ট্রাম, বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা, সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, পটচিত্র, বাউল গান, উত্তরবঙ্গের কোচবিহার রাজবাড়ি ও চা-বাগান। সবমিলিয়ে বারো ধরনের ব্যানার-ফ্লেক্স। প্রতিটিতে রয়েছে মমতার হাসিমাখা মুখ। তার সঙ্গে কোথাও হাওড়া ব্রিজ আবার কোথাও ট্রাম লাইনের ছবি। আবার কোনও ব্যানারে বাউল শিল্পীদের আখড়া অথবা সুন্দরবনের বাঘ।


বাংলার ঐতিহ্য সুরক্ষায় খেলা হবে। তবে, ঐতিহ্যের এই হাতেগোনা দ্বাদশ ধারকই নয়। রয়েছে আরও অনেককিছুই। এখানকার মাটি-জল-ভাষার সঙ্গে ঐতিহ্য-সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। তাকে রক্ষার দায় ‘বাংলার নিজের মেয়ে’ মমতা (Mamata Banerjee)। খেলা হবে…নির্বাচনী প্রচার-ময়দান ঢাকবে দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় কিংবা শান্তিনিকেতনের কোলাজে। বর্ষীয়ান এক তৃণমূল নেতা বলছিলেন, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান-সমরে বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপধ্যায়ের নিবিড় যোগকে তুলে ধরাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’


শুধু কথার কথা নয়, দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাট মন্দির চত্বরের উন্নয়ন, পর্যটনশিল্পের বিকাশে সুন্দরবনে সেতুবন্ধন প্রকল্প, পটচিত্র ও লোকগানকে বাঁচাতে বিভিন্ন পরিকল্পনা, বাংলার রাজ-গরিমাকে ধরে রাখতে সদর্থক পদক্ষেপ, উত্তরের চা-বাগানের সমস্যা দূরীকরণ সহ একাধিক ঐতিহ্য রক্ষায় নজির গড়েছে তৃণমূল সরকার। আবার বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যও ধরে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে হিন্দু-মুসলিম একত্রে বনবিবির আরাধনা করেন। কিরীটেশ্বরী মন্দিরে প্রবেশের জন্য জমি দেন মুসলিম পরিবার। বর্ধমানের মঙ্গলকোটে কবরস্থান গড়তে জমি দান করেন ব্রাহ্মণ পরিবার। এখানে রবিঠাকুরের জন্মস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো, মনীষীদের নামের ভুল উচ্চারণ কিংবা বিভাজন মানবে কেন বংলার মানুষ? মূলত এই প্রশ্নকে সামনে রেখে প্রচারে ঝড় তুলতে চায় তৃণমূল।

কথায় কথায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘আমার খারাপ লাগে, বাংলার বিজেপি নেতারা কি এখানকার সংস্কৃতি সম্পর্কে পুরোপুরি অজ্ঞ। তাঁরা কি কিছুই জানেন না? বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, বাংলা সম্পর্কে তাঁদের সম্যক ধারণা নেই। ভুলভাল তথ্য পরিবেশন করছেন। তাতে গোটা বিশ্বের কাছে মাথা নত হয়ে যাচ্ছে বাংলার। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। আর সেই প্রতিবাদের মুখই হল মমতা। তাই এই স্লোগান পথে-ঘাটে-বাজারে, মাঠে-ময়দানে ছড়িয়ে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’


সেই সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্ব এটাও মানছে—একুশের ভোট কঠিন না হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, লড়াই এবার বহুমুখী। বাংলার সংস্কৃতি-কৃষ্টিকে বাঁচানো ছাড়াও বিজেপির শ্রমিক-কৃষক স্বার্থবিরোধী অবস্থান, মেরুকরণের রাজনীতি, আত্মনির্ভরতার নামে বেসরকারিকরণ সহ একাধিক জনবিরোধী নীতির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। তা হলেও ভোট-যুদ্ধ কঠিন নয়। কেন? দলের এক প্রথমসারির নেতার ব্যাখ্যা, বিজেপির বহিরাগতদের হাতে যে ‘সোনার বাংলা’ গড়ে উঠবে না, সে সম্পর্কে বাংলার মানুষ একপ্রকার নিশ্চিত।


তৃণমূল নেতাদের এই আত্মবিশ্বাসে বাড়তি ভরসা—ইতিহাসের কোনও বাঁকেই সুবিধাবাদীরা ঠাঁই পাননি। এখন শুধু খেলা শুরু ও শেষের অপেক্ষা…! 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen