সাবধান! করোনা টেস্টের টোপে সাইবার হানা

এ বার কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতায় থাকা স্বয়ংশাসিত সংস্থা, যারা দেশবাসীর সাইবার সুরক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখে সেই ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইর্মাজেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি-ইন) এর তরফে।

June 26, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ইন্টারনেট ব্যবহারে গত সপ্তাহেই সতর্কবার্তা ছিল আসমুদ্র হিমাচল ভারতবাসীর জন্য। এক বেসরকারি সাইবার সুরক্ষা সংস্থার তরফে দাবী করা হয়েছিল, লাদাখ-সীমান্তে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসীকে ‘শিক্ষা দিতে দেশের প্রতিরক্ষা-বিদেশ মন্ত্রকের মতো সরকারি ওয়েবসাইট থেকে নামী সংবাদমাধ্যম-বেসরকারি সংস্থার সার্ভারের ‘অন্দরে’ সিঁদ কাটতে তাল ঠুকছে চীনা হ্যাকাররা।

সেই সতর্কতাই আবার ফিরে এল। এ বার কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতায় থাকা স্বয়ংশাসিত সংস্থা, যারা দেশবাসীর সাইবার সুরক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখে সেই ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইর্মাজেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি-ইন) এর তরফে। 

সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে এক বার্তা পোস্ট করে সিইআরটি-ইন জানিয়ে দিয়েছে, ২১ জুন থেকে শুরু করে অদূর ভবিষ্যতে ই-মেল অ্যাটাচমেন্টে পাঠানো স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত কম্পিউটার বা প্রাতিষ্ঠানিক সার্ভারে বড়সড় হামলা (ফিশিং) চালানোর পরিকল্পনা করেছে দুষ্কৃতীরা। 

ব্যক্তিগত তথ্য/ব্যাঙ্ক-কার্ড ডিটেলস হাতিয়ে নিয়ে র‍্যানসামওয়্যারের মাধ্যমে আর্থিক এবং একাধিক ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করতে পারে তারা। সহজ রাস্তা হিসেবে তারা দেশের সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য-পরিসংখ্যান বা সংশ্লিষ্ট কোনও তথ্যের টোপ ব্যবহার করতে পারে।

কিভাবে এই হামলা হতে পারে, তার একটা সম্ভাব্য রূপরেখাও দিয়েছে সিইআরটি-ইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবী, অবাঞ্ছিত ই-মেলে অ্যাটাচমেন্টের মাধ্যমে স্পাইওয়্যার পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে ২০ লক্ষেরও বেশী গ্রাহকের কাছে। 

সাবজেক্ট হিসেবে সরকারি তরফে আকর্ষক অফার, যেমন ‘হাউ টু অ্যাভেল ফ্রি কোভিড-১৯ টেস্ট ফর রেসিডেন্টস অফ দিল্লী, মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, আমদাবাদ অ্যান্ড মেট্রোজ ফ্রম গভর্নেমেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ থাকতে পারে। এই সুযোগ নিতে গেলে ওই মেলের সঙ্গে অ্যাটাচমেন্টে আসা ফর্ম ফিল-আপ করে পাঠানো বা ই-মেলে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে নির্দিষ্ট বাক্সে ব্যক্তিগত তথ্য ভর্তি করার কথা বলা হতে পারে।

এই ফাঁদে পা দিলেই বিপদ অনিবার্য। ই-মেল অ্যাটাচমেন্ট খুলে দেখতে গেলেই তাঁর অজান্তে কম্পিউটার মেমোরিতে সেঁধিয়ে যাবে স্পাইওয়্যার। তারপর সেখানে থেকে কম্পিউটারে থাকা তথ্য-ছবির অবাধ নাগাল চলে আসবে হ্যাকারের হাতে। 

করোনা টেস্টের টোপে সাইবার হানা

এ ভাবে চাইলে নির্দিষ্ট ম্যালওয়্যার ও ফিশিং মেল পাঠিয়ে ওয়েবসাইটের ডিফেসমেন্ট (হোম পেজের গঠন বদলে দেওয়া), ডেটা এক্সফিলট্রেশন (হোস্ট সিস্টেম সার্ভার থেকে গোপন তথ্য কপি করে নেওয়া) এবং ডিনায়াল অফ সার্ভিস-সহ একাধিক হামলাও চালানো যেতে পারে। র‍্যানসামওয়্যারের চক্করে বিপুল ‘মুক্তিপণ’ও দিতে হতে পারে আপনাকে বা সংস্থা কর্তৃপক্ষকে।

এইসব হ্যাকারদের পাঠানো ই-মেল সম্পর্কে যাতে আপনার সন্দেহ না হয়, তাই কোনও সরকারি নামের ছদ্মবেশও নিতে পারে তারা। যেমন ‘এনকোভ২০১৯@জিওভি.ইন’ এর মতো ছদ্ম-সরকারি ওয়েবসাইটের আড়াল থেকে ই-মেল পাঠানো হতে পারে, সিইআরটি-ইনের তরফে জানানো হয়েছে। ‘জিওভি.ইন’এক্সটেনশন দেখে সরকারি মনে করে মেল থেকে অ্যাটাচমেন্ট নিজের সিস্টেমে খোলা বা ইউআরএলে ক্লিক করলে, তথ্য পাচার শুরু হওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen