নন্দীগ্রামের কলঙ্কময় ‘ষড়যন্ত্রের’ বদলা নিতে প্রস্তুত ভবানীপুর

গত নির্বাচনে শোভনদেববাবুকে ২১ হাজারেরও  বেশি ভোটে লিড দিয়েছিল ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড।

September 26, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

 হুঙ্কার, হুমকি আর হাজারো ‘খোয়াব’-এ সাজানো গেরুয়া চিত্রনাট্য পুরো ফ্লপ। পদ্ম শিবিরের ‘আব কি বার’ স্বপ্ন চুরমার করে নিজের মেয়েকেই চেয়েছে বাংলা। নবান্নের ১৪ তলায় তৃতীয়বারের জন্য পৌঁছে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘরের মেয়ের হাতে আরও পাঁচ বছর নিশ্চিন্তে বাংলার শাসনভার ছাড়ার অঙ্গীকার আগেই করেছে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন সম্প্রদায়ের মানুষের বাসস্থান, ‘মিনি ভারতবর্ষ’ ভবানীপুর। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ইভিএমে বোতাম টিপে সেই অঙ্গীকার রক্ষার পালা। নন্দীগ্রাম আসনে কুৎসা, ষড়যন্ত্র আর অপমানের শিকার হতে হয়েছিল ঘরের মেয়েকে। ভবানীপুর তার বদলা নেবে—অন্তত এমনটাই ধারণা এমএম আলি রোডের ফরিদা বিবি, চক্রবেড়িয়ার অমিত পাসওয়ান আর চেতলা সেন্ট্রাল রোডের বাবলু নস্করদের। দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি সভাপতি শঙ্কর শিকদারের মতো কয়েকজনের অবশ্য দাবি, ভবানীপুরে পুনরাবৃত্তি হবে নন্দীগ্রাম অধ্যায়ের। তাঁদের ঘিরে বিস্তর ‘ট্রোল’ আর ‘মিম’ চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

 পরিসংখ্যান কী বলছে? গত ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে আয়োজিত উপনির্বাচনে রেকর্ড মার্জিনে জিতে মহাকরণে পা রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকমাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের জোড়াফুল প্রার্থী সুব্রত বক্সির চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি ভোট এসেছিল তাঁর ঝুলিতে। ১০ বছর পরে আবারও এক সেপ্টেম্বর মাসে ভবানীপুরের কাঁধে বর্তেছে মমতার মুখ্যমন্ত্রিত্ব ‘পাকা’ করার দায়িত্ব। গত বিধানসভা নির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সাড়ে ২৮ হাজার ভোটের মার্জিনকে টপকে যাওয়াটাই এবারের টার্গেট জোড়াফুলের। আর তা হতে পারে গণতন্ত্রের উৎসবে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ভবানীপুরের ভোট-রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে এই প্রেক্ষিতেই। 

মার্চ-এপ্রিল মাসে বিধানসভা নির্বাচনের তপ্ত বাতাবরণের আঁচ লেগেছিল ভবানীপুরে গায়ে, এবার তা স্তিমিত। তার একটা বড় কারণ জনতার দরবারে দেওয়া ভোট-প্রতিশ্রুতি পূরণের পর্ব শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দুয়ারে রেশন, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এখন বাস্তব। সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী আর খাদ্যসাথীর বিরামহীন পথ চলা। কলকাতা পুরসভার ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৭ ও ৮২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত  ভবানীপুর। তার মধ্যে একমাত্র ৭০ আর ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে গতবার ‘লিড’ নিয়েছিল বিজেপি। এবার কী হবে? ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর অসীম বসুর কথায়, প্রায় ৬৫ শতাংশ অবাঙালি ভোট এখানে। বাকিদের মতো তাঁরাও বুঝেছেন, কেন্দ্র সরকারের সর্বনাশা নীতির জেরে ব্যবসায়ীরা সমানভাবে বিপন্ন। এ রাজ্যের ঐক্য ও সংহতি বজায় রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই। লিড দেওয়ার পণ করেছেন ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর দেবলীনা বিশ্বাসও।

গত নির্বাচনে শোভনদেববাবুকে ২১ হাজারেরও  বেশি ভোটে লিড দিয়েছিল ৭৭ নম্বর ওয়ার্ড। সেই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর শামিমা রেহান খানের কথায়, এবার তা দাঁড়াবে কমপক্ষে ৩০ হাজারে। এবার যে মুখ্যমন্ত্রী ‘দিদি’কে ভোট দেব আমরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen