Bihar: ডাইনি অপবাদে ৫ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা, এই কুসংস্কার-অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্তির কি কোনও উপায় নেই? উঠছে প্রশ্ন

July 8, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:২৯: ডাইনি অপবাদে পুড়িয়ে হত্যা। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েও সমাজের কিছু অংশে এখনও রয়ে গেছে অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কার। সেই কুসংস্কারের বলি হয়ে বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় ঘটল এক নারকীয় ঘটনা। একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে।

আজ যে দেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির শিখরে পৌঁছে চাঁদকে স্পর্শ করেছে, সেই দেশেই ডাইনি সন্দেহে খুনের মতো মারাত্মক কুসংস্কার আজও চলছে। এটা সত্যিই ভাবার বিষয়। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, এক মহিলাকে অশুভ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রামের যাবতীয় অমঙ্গলের জন্য তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। তাঁর প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজন ‘ডাইনি’ অপবাদ দিয়ে হত্যা করে। এক্ষেত্রে গ্রামের স্বঘোষিত তান্ত্রিক, ওঝা অথবা মোড়ল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেক সময় গ্রামের সালিশি সভাতেও ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করা হয়।

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৬ সালে দেশে ২৫০০ জনের বেশি মহিলাকে এবং ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সারা দেশে প্রায় ৬৬৩ জন মহিলাকে ডাইনি অপবাদে হত্যার ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে। তবে বাস্তবে সেই সংখ্যাটা অনেক বেশি, কারণ সব ঘটনা পুলিশের নজরে আসে না। তথ্য অনুযায়ী সারা দেশের মোট ৬৫ শতাংশ ডাইনি হত্যার ঘটনা ঘটে ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ওডিশা এবং বিহারে। নারী নিগ্রহের অন্যতম একটি নৃশংস হাতিয়ার হল এই ডাইনি অপবাদ। মূলত অনুন্নত আদিবাসী এলাকাগুলিতে ডাইনি অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে বা কুপিয়ে মারার ঘটনা বেশি ঘটে। তবে এই কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্তির কি কোনও উপায় নেই? বিহারের ঘটনা ফের এই প্রশ্ন তুলে দিল।

বিহারের পূর্ণিয়ায় মুফাসিল থানার অন্তর্গত এক গ্রামে ডাইনি সন্দেহে একই পরিবারের ৫ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনাটি ঘটে সোমবার। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামের বাসিন্দা রামদেব ওরাওঁয়ের পুত্রের মৃত্যুর পর থেকেই ওই পরিবারের উপর আক্রোশ ঘনিয়ে ওঠে গ্রামবাসীদের। স্থানীয়দের দাবি, রামদেবের পুত্রের মৃত্যুর তিন দিন আগে ‘ঝাঁড়-ফুঁক’ করেছিল গ্রামের বাবুলাল ওরাওঁয়ের পরিবার! তার পরে গ্রামের আরও কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। মৃত্যু এবং অসুস্থতার জন্য বাবুলালের পরিবারকেই দায়ী করে গ্রামের একাংশ। সন্দেহের বশে রবিবার বাবুলালের পরিবারের পাঁচ জনকে পিটিয়ে মারা হয়। তার পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া দেহগুলিকে। অগ্নিদগ্ধ দেহগুলি ফেলে দেওয়া হয় গ্রামের পুকুরে। সেখান থেকেই পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে। বাবুলাল ছাড়াও ওই পরিবারের চার জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গ্রামবাসীকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে গ্রামের বাসিন্দা নকুল কুমারের নামে। খুনের ঘটনায় তাঁর যোগ থাকতে পারে, এই সন্দেহে পুলিশ নকুলকে গ্রেপ্তার করেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen