ভোট চাইতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী ফিরলেন ‘দেশের শত্রু’ তকমা নিয়ে
প্রদীপবাবুকে প্রণাম করে আশীর্বাদ চান শঙ্করবাবু।

বারাসতের(Barasat) এক বর্ষীয়ান সিপিএম(Cpim) নেতার বাড়িতে রবিবাসরীয় ভোট প্রচারে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়লেন বিজেপি(BJP) প্রার্থী। মুখের উপর ওই সিপিএম নেতা বিজেপি দলকে দেশের শত্রু বলার পাশাপাশি কোনওভাবেই তিনি বিজেপিকে ভোট দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। এই কথায় অস্বস্তিতে পড়া বিজেপি প্রার্থী শুধু প্রণাম পর্ব সেরে বেরিয়ে যান। এদিন ওই সিপিএম নেতার বাড়ি ছাড়াও বারাসত শহরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার চালান বিজেপি প্রার্থী। রবিবারের প্রচারে বারাসতে বাম প্রার্থীও পিছিয়ে ছিলেন না। অন্যদিকে, হাবড়ায় ভোট প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীদের মধ্যে কথার লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। দুই প্রার্থীই একে অপরকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে বারাসতের হেলাবটতলা মোড় লাগোয়া কালীমন্দিরে পুজো দিয়ে ভোট প্রচার শুরু করেন বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। এরপর তিনি শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার সারেন। যান প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ চক্রবর্তীর বাড়িতে। প্রদীপবাবু বারাসতের ডাকসাইটে সিপিএম নেতা। তাঁর নামে বাঘে-গোরুতে আর আগের মতো একঘাটে জল খায় না বটে, কিন্তু এলাকায় তাঁর প্রভাব রয়েছে এখনও। প্রদীপবাবুকে প্রণাম করে আশীর্বাদ চান শঙ্করবাবু। ওই সময় প্রদীপবাবু বলেন, আমার কাছে কেন এসেছ? ভালো করেই জানো, আমি তোমাদের ভোট দেব না। বরং অন্যদের বলব, তোমাদের ভোট না দিতে। আমাদের দলের প্রধান শত্রু বিজেপি। আমার বাড়িতে এসে তোমার কোনও লাভ হবে না।
শঙ্করবাবু হাসি মুখে, ওই বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রদীপবাবুর স্ত্রীকে তিনি প্রণাম করে আশীর্বাদ চান। এই বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের প্রদীপবাবু বলেন, কেউ কারও বাড়ি যেতেই পারেন। উনি এসেছেন ভালো কথা। কিন্তু আমাদের দলের কাছে বিজেপি এক নম্বর শত্রু। তাই ওই দলকে ভোট দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
শঙ্করবাবু বলেন, বারাসতের সমস্ত প্রবীণ রাজনৈতিক নেতার আশীর্বাদ নিতে আমি তাঁদের বাড়ি যাচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বিষয়। প্রদীপবাবুর পৃথক রাজনৈতিক আদর্শ রয়েছে। তিনি বারাসতের শ্রদ্ধেয় মানুষ। তিনি আমাকে ভোট দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। তাতে আমার কোনও অভিমান নেই। আমি তো ভোট চাইতে যাইনি। তিনি আমাকে আশীর্বাদ করায় আমি অত্যন্ত খুশি।
অন্যদিকে, বারাসতের নবপল্লি এলাকার ছোট বাজারে প্রচার সারেন বাম প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, রবিবার হাবড়ায় বুথভিত্তিক কর্মী সম্মেলন করেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এদিন তিনি বলেন, এখানকার বিজেপি প্রার্থী বলে বেড়াচ্ছেন হাবড়ায় নাকি উন্নয়ন হয়নি! দশবছর আগে এখানে কী ছিল আর এখন কী হয়েছে, তা হাবড়ার মানুষ ভালো বলতে পারবেন। আমার মনে হয়, বিজেপি প্রার্থীর চোখে ছানি পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে উনি বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করালে সমস্ত কিছু দেখতে পাবেন।
অন্যদিকে, রাহুল সিনহা এদিন হাবড়ার একাধিক জায়গায় জনসংযোগ করেন। ফুটবল মাঠে গিয়ে খেলায় অংশ নেন। তিনি বলেন, জ্যোতিপ্রিয়বাবু আমাকে বহিরাগত বলছেন। অথচ ওঁর বাড়ি সল্টলেক। আমি থাকি কলকাতায়। তাহলে কী করে তিনি ঘরের মানুষ হলেন আর আমি বহিরাগত? এলাকার উন্নয়ন কেমন হয়েছে তা এলাকার মানুষ জানে বলেই, লোকসভায় ২০ হাজার ভোটে বিজেপি এখানে এগিয়ে ছিল। হাবড়ার মানুষ এবার ওঁকে বিদায় দেবে।
অন্যদিকে, মধ্যমগ্রামে প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী রথীন ঘোষ। জেলার নানা প্রান্তের তৃণমূল, সংযুক্ত মোর্চা ও বিজেপির অন্য প্রার্থীরাও দিনভর প্রচার চালান।