বঙ্গ বিজেপিতে কোন্দল, দিল্লিতে পৃথক রিপোর্ট দিলেন তিন সাংসদ
বিজেপি সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষনেতারা ব্যস্ত। পাশাপাশি, দলের সর্বভারতীয় সভাপতির নির্ধারিত কর্মসূচির কারণেই এদিন সময় মেলেনি।

আরও তীব্র হচ্ছে রাজ্য বিজেপিতে দলীয় কোন্দলের ছবি। শুধু তাই নয়। বঙ্গ বিজেপির তিনজন সংসদ সদস্যর আচমকা দিল্লি সফরকে কেন্দ্র করে ঘনীভূত হচ্ছে রহস্যও। বুধবার রাতে দিল্লিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সঙ্গে ফের বৈঠক করেছেন বিজেপির দু’জন এমপি সৌমিত্র খাঁ এবং অর্জুন সিং। উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরেই সৌমিত্রবাবুর দিল্লির নর্থ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে একপ্রস্থ বৈঠক হয়। ফের রাতের বৈঠকে তুমুল জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বুধবার রাতের বৈঠকের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন অর্জুন সিং। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ‘বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু বুধবার রাতে ফের আমরা বৈঠক করেছি।’ দলের শীর্ষ সূত্রের খবর, এই আবহেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন বঙ্গ বিজেপির ওই এমপিরা। প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় বিজেপির ভোট বিপর্যয়ের পর কি আলাদাভাবে জে পি নাড্ডাকে (JP Nadda) এই সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট পেশ করতে চলেছেন গেরুয়া শিবিরের ওই তিনজন এমপি? তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। যদিও সূত্রের খবর, বুধবার গভীর রাতের বৈঠকেও বিজেপি (BJP) এমপি নিশীথ প্রামাণিক হাজির ছিলেন না।
বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে ২০০টিরও বেশি আসনে জয়ের দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডারা। কিন্তু তিন অঙ্কেই পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। দলের অন্দরের খবর, প্রকাশ্যে ভালো ফলের দাবি করলেও আদতে এহেন বিপর্যয়ের জেরে বঙ্গ বিজেপিতে একে অপরকে দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে। বাংলা নিয়ে ভুল সাংগঠনিক রিপোর্টের ফলেই পশ্চিমবঙ্গে দলের এই খারাপ ফল হয়েছে বলে মনে করছে বিজেপির একটি অংশ। এই পরিস্থিতিতে যদি বঙ্গ বিজেপির তিনজন এমপি আলাদা করে ভোট বিপর্যয় নিয়ে জে পি নাড্ডাকে রিপোর্ট দেন, তাহলে তা দিলীপ ঘোষ শিবিরের জন্য চরম অস্বস্তির কারণ হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এ ব্যাপারে ওই তিনজন সংসদ সদস্যর কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। তবে বৃহস্পতিবার জে পি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মেলেনি। বিজেপি সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষনেতারা ব্যস্ত। পাশাপাশি, দলের সর্বভারতীয় সভাপতির নির্ধারিত কর্মসূচির কারণেই এদিন সময় মেলেনি।
সামগ্রিক বিষয়ে বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘এমপিদের দিল্লিতে আসা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। হয়তো সংসদীয় কমিটির বৈঠক আছে। রাজ্য বিজেপিতে কোনও দলীয় কোন্দল নেই। ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে নিয়মিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’ বিজেপির অন্দরের খবর, জে পি নাড্ডার সঙ্গে দলের এমপিদের কথা হোক বা না হোক, তাঁরা যে আলাদাভাবে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন, এটিই যথেষ্ট অস্বস্তির। ইতিপূর্বে জে পি নাড্ডার সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করে গিয়েছেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়। দু’দিন ধরে দিল্লিতে থেকে আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও। অর্থাৎ, দিলীপ শিবিরের জন্য অস্বস্তি কাটার লক্ষণ নেই।