বেসুরো বিজেপির প্রাক্তন লোকসভা প্রার্থী! দলের বিরুদ্ধে উগড়ে দিলেন ক্ষোভ
এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে বিজেপির ফল ভালো।

বেসুরো বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত। দলীয় দুই নেতার বঙ্গভঙ্গের দাবি ও সে প্রসঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নীরব থাকা।
বিষয়টি যে বাংলা ও বাঙালির আবেগের ওপর ধাক্কা তা বোঝাতে একটি বাংলা দৈনিকে খোলামেলা মত প্রকাশ করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ২৬ আগস্ট ওই কাগজটির উত্তর সম্পাদকীয়তে এই প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য জানাতে গিয়ে একদিকে যেমন ওই দুই নেতার সমালোচনা করেছেন, তেমনি সমালোচনা করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও। অনুন্নয়ন এবং আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে গত জুন মাসে উত্তরবঙ্গের বিজেপি সাংসদ ও সংখ্যালঘু মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা উত্তরবঙ্গকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পৃথক করার দাবি তোলেন। সম্প্রতি সেখানকার আর এক সাংসদ ও স্বরাস্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক যা সমর্থন করেছেন। দুই মন্ত্রীর এহেন দাবির সমালোচনায় উত্তর সম্পাদকীয়তে রন্তিদেবের দাবি, পরিকল্পিত উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা এই কথা বলেছেন।
এ বছর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে বিজেপির ফল ভালো। কিন্তু সদ্য নির্বাচনের আগে এই দাবি যে বিজেপির ইস্তেহারে ছিল না তা উল্লেখ করে রন্তিদেব লিখেছেন, ‘উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করার দাবির পিছনে উত্তরবঙ্গের মানুষের আদৌ সমর্থন আছে কি না, তা কিন্তু জানা যায়নি। নির্বাচনে জেতার পর এখন উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচিত এই দুই মন্ত্রী যদি মনে করেন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাগুলি তাঁরা উত্তরবঙ্গের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেবেন, তাহলে বোধ করি ভুল করছেন।’
এই প্রসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও মন্ত্রীদের দিকে আঙ্গুল তুলে রন্তিদেবের দাবি, ‘বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বা কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত একবারও বলেননি, এই দাবির প্রতি তাঁদের সমর্থন নেই বা এই দাবিকে তাঁরা মান্যতা দিচ্ছেন না। বরং এই বিষয়ে তাঁদের নীরবতা এক ধরনের সন্দেহেরই জন্ম দেবে।’ সেই সঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবস্থার ব্যাখ্যায় রন্তিদেবের দাবি, দিলীপ ঘোষ না পারছেন ছুঁচোটিকে গিলতে না পারছেন ওগরাতে।
ভোটের আগে এরাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভূমিকা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশের শয়ে-শয়ে বিজেপি নেতা এ রাজ্যে এলেন। বাংলার সংস্কৃতি, বাঙালির আবেগের কোনও রকম তোয়াক্কা না করেই হিন্দি বলয়ের কৌশলে বাংলা দখলের চেষ্টা করলেন। সর্বশেষে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরেও গেলেন।’ উল্লেখ্য, এবছর বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ছাড়াও গত লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন রন্তিদেব।
বৃহস্পতিবার তাঁর এই মতামত নিয়ে দলের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, ‘এই কথাগুলো অনেক দিন আগে থেকেই আমরা বলে আসছি। ভোটে হারার পর এখন বিজেপি নেতাদের বিলম্বিত বোধোদয় হচ্ছে।’