ত্রিপুরায় স্বশাসিত জেলা পরিষদের ভোটে ভরাডুবি বিজেপির

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পাঞ্জাবের পুরভোটে গো-হারা হেরেছে বিজেপি।

April 11, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

‘মোদি ম্যাজিক’, ‘গেরুয়া ঝড়’ শব্দবন্ধগুলি কী ক্রমেই ফিকে হয়ে যাচ্ছে? পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশের পর শনিবার এমনই গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিল ত্রিপুরা। 


ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পাঞ্জাবের পুরভোটে গো-হারা হেরেছে বিজেপি। এই ভোটে নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক আন্দোলনের রাজনৈতিক অভিঘাত স্পষ্ট। হিমাচল প্রদেশের কুর্সিতে বিজেপি। বুধবার সেখানকার পুরভোটে ভরাডুবি হয় গেরুয়া শিবিরের। এবার মোদি-শাহদের বিজয় রথের চাকা থমকে গেল নিজেদের শাসনে থাকা ত্রিপুরায়। রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত স্বশাসিত জেলা পরিষদ (টিএডিএস) নির্বাচনে বিজেপিকে প্রত্যাখান করেছেন সাধারণ মানুষ। রাত পর্যন্ত খবর, ২৮টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে এগিয়ে টিআইপিআরএ জোট। দেশের পাঁচ রাজ্যে ভোট চলাকালীন এভাবে একের পর এক বিপর্যয়ের খবরে এখন ‘চোখে সর্ষে ফুল দেখা’র অবস্থায় পদ্ম শিবিরের ম্যানেজাররা। বিশেষ করে বাংলার ভোটে তিন রাজ্যের ফলাফল মোদি-শাহদের জোর ধাক্কা দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, ইতিমধ্যেই বিজেপির হারের ধারাবাহিকতাকে সামনে এনে জোরদার প্রচার চালাচ্ছে মূল প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস। ছেড়ে কথা বলছে না বাম-কংগ্রেসও। 


ত্রিপুরায় কংগ্রেসের এক সময় দাপুটে নেতা ছিলেন রাজা প্রদ্যুৎ মাণিক্য দেববর্মন। দায়িত্ব সামলেছিলেন প্রদেশ সভাপতির পদও। নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে দলের সঙ্গে মন কষাকষির জেরে তিনি কংগ্রেস ছা঩ড়েন। গড়ে তোলেন  তিপ্রা মথা নামে একটি রাজনৈতিক দল। আইএনপিটি’কে সঙ্গে নিয়ে টিএডিএস নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন প্রদ্যুৎ। ত্রিপুরায় এই যৌথ লড়াইকে বলা হচ্ছে টিআইপিআরএ জোট। 


রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত ২০টি বিধানসভা কেন্দ্রে কাউন্সিলের সংখ্যা ৩০টি। মোট ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন এই জেলাগুলিতে। নির্বাচন হয়ে থাকে ২৮টিতে। বাকি দু’টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন করে থাকেন রাজ্যপাল। শনিবার কাউন্সিল ভোটের ফলাফলে জোটেরই জয়জয়কার। ১৮টি কাউন্সিলে এগিয়ে জোট। মাত্র সাতটিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ফলে জোটের জয় স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। ত্রিপুরার রাজনীতিতে গেরুয়া শিবিরের এই পরাজয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, কাউন্সিলের ভোট-ফলাফলের গতিপ্রকৃতি থেকে বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক শক্তির আঁচ পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে ২০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৮টি দখল করে বিজেপি জোট। এবার কাউন্সিলগুলি দখলের মাধ্যমে আদিবাসীদের উপর নিয়ন্ত্রণের স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। কিন্তু দু’ বছরের মধ্যেই ভোটের ফল তাদের স্বপ্নভঙ্গ করেছে। 

শেষবার কাউন্সিলের নির্বাচন হয়েছিল ২০১৫ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের মে মাসে কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন কাউন্সিলে রাজ্যপালের শাসন জারি রয়েছে। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ২৫টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen