অন্তর্কলহে জেরবার বিজেপি, বদলাতে পারে কর্ণাটক, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী

নতুন করে সমস্যা শুরু হয়েছে কর্ণাটক ও ত্রিপুরায়

July 18, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রাজ্যে রাজ্যে দলের অন্দরে অশান্তি ও মতবিরোধে নাজেহাল বিজেপির(BJP) শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে উত্তরাখণ্ডে। চার মাসের মধ্যে সেখানে তিনজন মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে। সেই অস্বস্তির রেশ কাটার আগেই এবার নতুন করে সমস্যা শুরু হয়েছে কর্ণাটক ও ত্রিপুরায়। এই দুই রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতায়। এবং দুই রাজ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলের একাংশে প্রায় বিদ্রোহের পরিবেশ। তা সামলাতে আসরে নেমেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। কিন্তু, তাতে সমাধানসূত্র মিলছে না। কাজেই হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।


কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা শুক্রবার থেকে দিল্লিতে রয়েছেন। দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। দীর্ঘক্ষণ সেই বৈঠক চলে। শনিবার জগৎপ্রকাশ নাড্ডা এবং অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করেন ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর এই দিল্লি সফরের মধ্যেই কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী বদলের জল্পনা তুঙ্গে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সে রাজ্যে প্রশাসনিক প্রধান পদে নতুন কাউকে দেখা যাবে বলে চর্চা শুরু হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ‌ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ই঩য়েদুরাপ্পা। অব্যাহতি চেয়েছেন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে। কিন্তু, এদিন অমিত শাহ ও জগৎপ্রকাশ নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়ে তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী অথবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আমাকে ইস্তফা দিতে বলেননি। বরং, আগামী নির্বাচনে বিজেপি যাতে আবার ক্ষমতায় ফিরতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে। লোকসভা ভোটেও কর্ণাটকে আগের তুলনায় বেশি আসন পাবে দল।’


সাম্প্রতিক রদবদলে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী হিসেবে পরিচিত কর্ণাটকের এমপি শোভা কারান্দলাজেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, এর বিনিময়ে এবার ইয়েদুরাপ্পাকে কার্যত সরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। নতুন কোনও মুখকে সামনে রেখে আগামী দিনে কর্ণাটকে লড়াই হবে। যদিও এই কাজটা সহজ নয়। কারণ, সে রাজ্যে এখনও ই঩য়েদুরাপ্পার মতো শক্তিশালী নেতা বিজেপির অন্দরে নেই। ফলে তাঁকে চটিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে ইয়েদুরাপ্পাকে বুঝিয়ে সুজিয়েই। তাহলে কি বি এল সন্তোষ হবেন আগামী দিনের মুখ্যমন্ত্রী? সেই চর্চাও চলছে। তবে ইয়েদুরাপ্পা অবশ্যই চাইবেন তাঁর অনুগামী কাউকে পদে বসাতে। ঠিক একই জল্পনা শুরু হয়েছে ত্রিপুরা নিয়ে।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি অবশ্য বলছেন, ত্রিপুরার উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েই আলোচনা করতে তাঁর এই দিল্লি সফর। বিশেষ করে আগর গাছ এবং আগর কাঠ সংক্রান্ত বিশেষ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত এই গাছ ও কাঠের সঠিক ব্যবহার ও সৃজনের ব্যবস্থা হয়, সেটা নিয়ে সামগ্রিক প্রকল্প তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। এই একই উদ্দেশ্য ঩নিয়ে তিনি দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে। কিন্তু, ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিপ্লবকুমার দেবকে আদতে ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজধানীতে। তিনি দলের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেও কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ত্রিপুরা বিজেপির অন্দরে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে রাজ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে দল। সুতরাং, বিপ্লবকুমার দেবকেও কি সরিয়ে দেওয়া হবে? এই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen