বাংলার দুর্দিনেও মোবাইল ফোনে মমতাকে হটানোর অভিযানে নেমেছে গেরুয়া শিবির
করোনার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়, এই জোড়া বিপর্যয়ে রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই আহ্বানকে কার্যত ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতিকেই পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির।
করোনার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়, এই জোড়া বিপর্যয়ে রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই আহ্বানকে কার্যত ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতিকেই পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির। এই দুর্দিনেও বাংলা থেকে মমতাকে হটানোর মোবাইল ফোন ভিত্তিক অভিযান শুরু করেছে তারা। এ রাজ্য তো বটেই, দেশের যে কোনও প্রান্তে বঙ্গভাষীর মোবাইল ফোনে আসছে বিজেপি আইটি সেলের কল, ‘যদি মমতাকে হটাতে চান, এক টিপুন।’ জানা গিয়েছে, গেরুয়া শিবিরের এই রাজনৈতিক অভিসন্ধির ভরকেন্দ্র গুজরাতের আহমেদাবাদ। গত দু’তিনদিন ধরে শুরু হওয়া এই অভিযানে যে কটি মোবাইল নম্বর সামনে এসেছে, তার সবকটিই সেখানকার। করোনা বিপর্যয়, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, অর্থনীতির বেহাল দশার মাঝে পুনর্গঠনকে দূরে সরিয়ে কীভাবে শুধু ‘মমতা হটাও’ অভিযানে মরিয়া হয়ে উঠল বিজেপি, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
বিজেপির তরফে করোনা প্রতিরোধে মমতা ব্যর্থ, এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে বারবার। সেই প্রচারের ভরকেন্দ্রও গুজরাত। বিজেপি শাসিত যে রাজ্যের বিরুদ্ধে করোনা প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত, সেই রাজ্য মমতার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তোলে কেমন করে, উঠছে সেই প্রশ্নও। গেরুয়া শিবিরের এহেন দ্বিচারিতা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। বিষয়টি নজরে এসেছে মমতারও। ঘনিষ্ঠ মহলে এই নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, একের পর এক ফেক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ওরা (বিজেপি)। এই বিপর্যয় পর্বে সাহায্য করার বদলে, নোংরা রাজনীতি শুরু হয়েছে। ওরা পাগল হয়ে গিয়েছে। বাংলার মানুষই এর জবাব দেবেন।

এদিকে, এই মমতা বিরোধী অভিযান পর্বে বিজেপি আইটি সেলের কল পাওয়া প্রেরণা সান্যাল নামে এক মহিলার প্রশ্ন, কেন বাংলাই টার্গেট? তিনি তাঁর ওই বক্তব্য সোমবারই পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। তাঁর সেই পোস্ট ঘিরে নানা মতামতও উঠে আসছে। প্রেরণাদেবী গত ২০১৮ সাল থেকে তাঁর মোবাইল নম্বরটি দিল্লি সার্কেলে স্থানান্তরিত করেছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, বিজেপি আইটি সেলের এই প্রচার অভিযানে মোবাইল গ্রাহকের ফোন রিসিভ করলেই প্রথমে রেকর্ডেড ভয়েস শোনাচ্ছে, অনেক হয়েছে, এবার মমতাকে সরানোর দিন এসেছে। আপনি যদি চান কি প্যাডে এক টিপুন। তৃণমূলের অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সাহায্য তো দূরের কথা। কেন্দ্রের তরফে ঘোষিত এক হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হলেও এখনও পায়নি রাজ্য। দুর্গত মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে, নোংরা প্রচার চালানো হচ্ছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে।