চার মাসে ৩ বার মন্ডল কমিটি বদলেও মিলছে না সুরাহা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার মহিষাদল বিজেপি

September 11, 2025 | 2 min read

Authored By:

Drishti Bhongi Drishti Bhongi

 

 

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:০০: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল-২ মণ্ডলে বিজেপি (BJP)। মাত্র চার মাসের মধ্যে তিনবার মণ্ডল কমিটি গঠন করতে হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। বারবার তালিকা প্রকাশের পর ক্ষোভে নেতা-কর্মীরা বসে যাওয়ায় সংগঠন সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে পদ্ম শিবির। দলের অন্দরে দাবি উঠছে, এ ধরনের পরিস্থিতি বিজেপির ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি।

গত ফেব্রুয়ারিতে তমলুক সাংগঠনিক জেলায় একযোগে একাধিক মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা হয়। মহিষাদল-২ মণ্ডলের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন চন্দনা সামন্ত দাস, যিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় সেখানেই। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাংগঠনিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তিনজনের প্যানেলে চন্দনার নাম ছিল তৃতীয় স্থানে। প্রথম স্থানে ছিলেন শান্তনু বল্লভ, দ্বিতীয় স্থানে নারায়ণ মান্না। সেই তালিকা জেলা থেকে পরিবর্তন করে চন্দনার নাম শীর্ষে বসিয়ে রাজ্যে পাঠানো হয়। এরপরই দলের একাংশ ক্ষোভে বসে যায়।

ফেব্রুয়ারির পর জুনে ১৯ জনকে নিয়ে মণ্ডল কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু ওই তালিকা প্রকাশের পর ফের অশান্তি শুরু হয়। শান্তনু বল্লভ ও তাঁর অনুগামীরা সরাসরি বিক্ষোভে নামে। জেলা নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। আগস্টের শেষ সপ্তাহে ফের ২০ জনের নতুন তালিকা ঘোষণা করা হয়। তবে তাতেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামেনি। অনেক নেতা-কর্মী দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন।

অবশেষে ৪ সেপ্টেম্বর তৃতীয়বারের জন্য কমিটি তৈরি হয়। আগের তালিকা থেকে বেশ কিছু নাম বাদ দিয়ে এবং নতুন কয়েকজনকে যুক্ত করে ২০ জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মহিষাদল-২ মণ্ডল কমিটি গঠিত হয় গড়কমলপুর, লক্ষ্যা-১ ও ২ এবং ইটামগরা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে। এর মধ্যে লক্ষ্যা-১ ও ইটামগরা-২ বিজেপির দখলে। তবু মণ্ডল নেতৃত্ব নির্বাচনে একাধিক স্তরে সমস্যা দেখা দেয়। ওই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রিটার্নিং অফিসার ছিলেন নন্দীগ্রামের নেতা অঞ্জন ভারতী এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার ছিলেন হলদিয়ার সুব্রত দে। জেলা পর্যায়ের দায়িত্বে ছিলেন শমীক দাস ও তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, তপন বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তনু বল্লভকে সভাপতি পদে চাননি বলেই তালিকায় রদবদল করা হয়।

মণ্ডল সভাপতি চন্দনা সামন্ত দাস বলেন, “কমিটি নিয়ে দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল। সাংগঠনিক কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তাই তিনবার তালিকা বদল করতে হয়েছে।”

প্রাক্তন জেলা সভাপতি ও বর্তমানে জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মণ্ডল কমিটিতে সকলের যাওয়ার আগ্রহ থাকে। প্রথম তালিকা ঘোষণার পর ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। পরে রদবদল করে সমস্যা মেটানো হয়েছে।”

তবে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের আশঙ্কা, মণ্ডল স্তরে এই অন্তর্কলহ অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়বে। স্থানীয় বিজেপি শিবিরে এখন সেই নিয়েই চরম অস্বস্তি।

 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ফলো করুন :

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen