রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়কের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা

বিধায়কের এমন আচরণ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।

January 11, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বিধায়ক নিজের বিধানসভা এলাকাতে থাকেন না, এই অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দারা। তাঁকে প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায় না, এই অভিযোগ তুলে এবার বিধায়কের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তাঁরা দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে করজোড়ে বিধায়ককে গাড়ি থেকে নেমে দু’দণ্ড কথা বলার আহ্বান জানান। যদিও গাড়ি থেকে নামেননি বিধায়ক। বরং বিধায়কের দেহরক্ষীরা দলীয় কর্মীদের ঘাড় ধাক্কা দেন। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করেছে।

রবিবার বিকেলে গাংনাপুরের এই ঘটনা সামনে আসতেই বিজেপির একাংশের কর্মী-সমর্থকরা ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছেন। এনিয়ে দলের অন্দরেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারী কর্মীদের দাবি, আমরা এলাকার সমস্যার কথা জানানোর জন্য বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীকে কাছে পাই না। ওইদিন বিকেলে বিধায়কের আসার কথা আগে থেকেই শুনেছিলাম। তাই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হল না। উল্টে তাঁর দেহরক্ষীদের ঘাড়ধাক্কা খেতে হল। নির্বাচনের সময় তাঁর হয়ে কাজ করেছি। আর এখন তিনি দেহরক্ষীদের দিয়ে আমাদের ঘাড় ধাক্কা দিলেন। এর থেকে অপমান, লজ্জার কিছু নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওইদিন আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি। 


রবিবার বিকেলে মাঝেরগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মিঠাপুর গ্রামে বস্ত্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন বিধায়ক। ৪১নম্বর জেডপির মণ্ডল সভাপতি উত্তম বর্মন বলেন, এলাকার মানুষ বিভিন্ন শংসাপত্রের জন্য বিধায়ককে কাছে পান না। আমাদের কেন্দ্র থেকে বিধায়কের বাড়ি অনেক দূরে। এর আগেও আমি বিধায়ককে সপ্তাহে অন্তত একদিন এলাকায় থাকার জন্য আবেদন করেছিলাম। হয়তো বিধায়ক সময় করে উঠতে পারেননি। যে কারণে ওইদিন দলের কর্মীদের অনেকেই বিধায়ককে এলাকায় পেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাছাড়া ওইদিন যে কর্মসূচি ছিল, সে ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।


যদিও এনিয়ে বিধায়কের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য সোমবার একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। মেসেজেরও জবাব দেননি। 
বিজেপি নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি। ওইদিন দলের কর্মীরা বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাননি। ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের দাবি, দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে ওইদিন আমরা বিধায়কের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। তাঁর কাছে দু’মিনিট সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি। তাঁর দেহরক্ষীরা আমাদের সরিয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে তখন বিধায়ককে বলেছি, আমাদের জন্য আপনি আজ বিধায়ক হয়েছেন। কিন্তু আজ কেন আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন না? যদিও তার উত্তর না দিয়ে তিনি এলাকা থেকে চলে যান।


বিধায়কের এমন আচরণ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর দীপক বসু বলেন, বিজেপি হল পরিযায়ী পাখি। ভোটে জিতে তিনি বিধায়ক হয়েছেন। তাই তাঁকে আর এলাকায় পাওয়া যাবে না। এটাই স্বাভাবিক। যে বিধায়ক দলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চান না, তিনি মানুষের জন্য কী করবেন?প্রসঙ্গত, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথমবার পদ্ম ফুল ফুটেছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বর্ণালী দে’কে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন মুকুটমণিবাবু। রাজনৈতিক মহলের মতে, কিছুদিন আগে রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নির্বাচনের পরই মুকুটমণিবাবু বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেন। প্রকাশ্যে আসে দলের গোষ্ঠীকোন্দল। এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে পড়েছে পদ্ম শিবির।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen