তৃণমূল থেকে আসা নেত্রীকে নিয়ে ক্ষোভ বিজেপির অন্দরে

মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের নতুন জেলা কমিটি ঘোষিত হয়।

January 13, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

তৃণমূল ত্যাগ করে মাত্র পাঁচ মাস আগে বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছিলেন। সেই নেত্রী বিষ্ণুপুর (Bishnupur) সাংগঠনিক জেলার শীর্ষ কমিটিতে ঠাঁই পাওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের নতুন জেলা কমিটি ঘোষিত হয়। জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করেন। তাতে ওন্দার প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী বাণী হাজরার নাম শুনেই দলীয় কর্মীদের একাংশ কার্যত তেলে বেগুনে জ্বলে যান। অফিসের ভিতরেই এনিয়ে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দেন। ঘটনায় ওন্দা এলাকাতেও দলীয় কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এতে বিজেপির ওন্দা মণ্ডলে গোষ্ঠীকোন্দল চরমে ওঠার আশঙ্কা করছেন দলের একাংশ। এনিয়ে ক্ষোভ চেপে রাখেননি ওন্দার মণ্ডলের নেতারাও। তবে, প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না।

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বলেন, বাণীদেবী আগে যে দলই করুন না কেন, বর্তমানে তিনি আমাদের দলে আছেন। দলের রাজ্য কমিটি তাঁকে অনুমোদন দিয়েছে। তাঁকে দলের কাজে আরও বেশি করে শামিল করার জন্য সাংগঠনিক জেলা সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষোভের কিছু নেই। কারও কিছু বলার থাকলে দলে এনিয়ে আলোচনা করা হবে। তাতেই ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।

বাণীদেবী বলেন, আমি নরেন্দ্র মোদির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। দলের প্রতি নিষ্ঠা দেখে অল্প দিনের মধ্যেই আমাকে জেলা কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। এর জন্য নেতৃত্বের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। দলের নির্দেশে আমি সকলকে নিয়ে চলব। গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও আশঙ্কা নেই।

ওন্দার চন্দ্রকোণা গ্রামের বাণীদেবী বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য ও তৃণমূল কংগ্রেসের ওন্দা ব্লক যুব সভাপতি ছিলেন। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এমনকী ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ তুলে স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা তাঁর বাড়িতে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। তাঁর কাজকর্ম নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব চরম অস্বস্তিতে পড়ে যায়। তারপর থেকে বাণীদেবীকে তৃণমূল কংগ্রেসে কার্যত ব্রাত্য করে রাখা হয়।

তৃণমূলে গুরুত্ব না পাওয়ায় তিনি বিজেপির উপরতলার নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গত ৭ আগস্ট তিনি কলকাতায় দিলীপ ঘোষের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন। স্থানীয় নেতাদের কোনওরকম মতামত না নিয়েই বাণীদেবীকে দলে যোগদান করানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। গত পাঁচ মাসে বাণীদেবীকে বিজেপির দলীয় কর্মসূচিতে সেভাবে দেখা যায়নি। মণ্ডল এলাকায় যে কোনও কর্মসূচিতে কর্মীরাও তাঁকে কার্যত এড়িয়ে চলতেন। তাঁকে দলের সাংগঠনিক জেলার শীর্ষ কমিটিতে ঠাঁই দেওয়ায় বিজেপি কর্মীরা ভীষণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আগামিদিনে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ চরম আকার নেওয়ার আশঙ্কা করছেন দলেরই একাংশ।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র কিছুদিন আগে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি বদল করা হয়। হরকালী প্রতিহারের পরিবর্তে সুজিত অগস্তিকে সভাপতি করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার জেলার সাংগঠনিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। তাতে সাতজনকে সহ সভাপতি এবং সাতজনকে সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়াও তিনজনকে সাধারণ সম্পাদক ও একজনকে কোষাধ্যক্ষ করা হয়েছে। সম্পাদক পদে বাণী হাজরার নাম নিয়েই বিজেপি কর্মীদের মনে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen