রক্ত লেগে জ্ঞানেশ কুমারের হাতেই! কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তৃণমূল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৫৩: বঙ্গে চলমান SIR প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) দপ্তরে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের (Gyanesh Kumar) সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের ১০ সাংসদের প্রতিনিধি দল। বেলা ১১টার সময়মতো বৈঠক শুরু হলেও আলোচনার শেষে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সরব হন ডেরেক ও’ ব্রায়েন, শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র-সহ অন্যান্য সাংসদরা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ, SIR-এর চাপে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে এবং এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন না মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (Chief Election Commissioner)। শতাব্দী রায়, দোলা সেনদের প্রশ্ন, “এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুগুলোর রক্ত কি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতেই লেগে নেই?” ডেরেকের দাবি, SIR-সম্পর্কিত তৃণমূলের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছে কমিশন।
আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সারা বাংলায় ভোটার তালিকার (voter list) বিশেষ নিবিড় সংশোধন চলছে। মাত্র দুই মাসের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই সমস্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, এই তাড়াহুড়ো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত; এতে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। সেই চাপেই সাধারণ মানুষ এবং BLO-দের ওপর অতিরিক্ত কাজের বোঝা তৈরি হয়েছে, যা মৃত্যুর মতো অনভিপ্রেত ঘটনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশে দিল্লিতে গিয়ে প্রতিনিধিরা কমিশনের সামনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরেন। সাংসদদের আরও প্রশ্ন, গত বছর সাধারণ নির্বাচন এবং পরে তিনটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, সবই এই ভোটার তালিকার ভিত্তিতে হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, “তাহলে এক বছরের ব্যবধানে একই ভোটার তালিকা কীভাবে হঠাৎ অবিশ্বস্ত হয়ে গেল?”
তৃণমূলের দাবি, পাঁচটি প্রশ্নের কোনওটিরই উত্তর দিতে পারেননি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। প্রশ্নগুলি হল…
১) যদি উদ্দেশ্য ভুয়ো ভোটার বাদ দেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সীমান্ত লাগোয়া ত্রিপুরা, মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এই রাজ্যগুলোতে SIR চলছে না কেন?
২) এই একই ভোটাররা তো কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও নির্বাচিত করেছেন। তাহলে কি বিজেপি এখন স্বীকার করছে যে তাদের নিজের সরকারই “অবৈধ”?
৩) SIR-এর অমানবিক চাপ ও আতঙ্কে বহু BLO এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রাণহানির দায় কি নির্বাচন কমিশন নেবে?
৪) ডেটা এন্ট্রি-র কাজে ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্র’-এর কর্মীদের সাহায্য নিতে কমিশন কেন বাধা দিচ্ছে?
৫) বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, বাংলায় ১ কোটি নাম বাদ যাবে। তাহলে কি বিজেপিই এখন নির্বাচন কমিশন চালাচ্ছে?