রক্তাক্ত বাংলাদেশ, গণপিটুনিতে নিহত হিন্দু যুবকের পর এবার উদ্ধার শিশুর ঝুলন্ত দেহ
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:৪১: বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর বাড়ছে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ। ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস হত্যার পর এবার রাজবাড়িতে অমৃত মন্ডল (Amrit Mondal) নামে এক হিন্দু যুবক গণপিটুনিতে নিহত। একইসঙ্গে গামছায় এক হিন্দু শিশুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সংখ্যালঘুদের মধ্যে।
বুধবার রাতে রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার হোসেনডাঙ্গা গ্রামে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় অমৃত মন্ডল নামের এক যুবকের। স্থানীয় সূত্রে খবর, অমৃত ওই এলাকারই বাসিন্দা এবং তিনি ‘সম্রাট’ নামেও পরিচিত ছিলেন। অভিযোগ, বুধবার রাতে শাহিদুল ইসলাম নামের এক গ্রামবাসীর বাড়িতে তিনি ও তাঁর দলবল চড়াও হন।
গ্রামবাসীদের দাবি, অমৃত ও তাঁর সঙ্গীরা ওই বাড়িতে তোলাবাজি করতে গিয়েছিলেন। শাহিদুল ও তাঁর পরিবারের চিৎকারে গ্রামবাসীরা ছুটে এলে অমৃতের সঙ্গীরা পালিয়ে যায়, কিন্তু অস্ত্রসহ ধরা পড়ে যান অমৃত। উত্তেজিত জনতা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
মহম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানালেও, এর সঙ্গে ধর্মীয় কোনও যোগসূত্র থাকার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছে। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি ধর্মীয় সহিংসতা নয়, বরং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জেরে ঘটা ঘটনা।
পুলিশের দাবি, নিহত অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট পুলিশের খাতায় তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ অপরাধী। তিনি ‘সম্রাট বাহিনী’ নামের একটি দলের প্রধান ছিলেন, যারা এলাকায় হুমকি ও তোলাবাজির মতো অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত। ২৯ বছর বয়সী অমৃতের বিরুদ্ধে হত্যাসহ অন্তত দুটি গুরুতর মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রাজবাড়ির এই ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহ আগেই ময়মনসিংহে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পিটিয়ে মারা হয়েছিল দীপু চন্দ্র দাসকে (Dipu Chandra Das)। সেই ঘটনায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। দীপু দাসের হত্যা নিয়ে ঢাকা এবং ভারতের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়। সরকার দীপুর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেও, এর মধ্যেই ফের এক হিন্দু যুবকের মৃত্যু এবং গামছায় এক শিশুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে।