ফের রক্তাক্ত পাকিস্তান! বিদ্রোহীদের অতর্কিত হামলায় নিহত অন্তত ১৫পাক সেনা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৩০: ফের বড়সড় নাশকতার ছকে রক্তাক্ত হলো পাকিস্তান (Pakistan)। বুধবার ভোরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পাক সেনার কনভয় লক্ষ্য করে ভয়াবহ হামলা চালাল পাকিস্তানের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP)। এই অতর্কিত হামলায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জন পাক সেনা জওয়ানের (Pakistan Army) মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যাও একাধিক। তবে পালটা লড়াইয়ে বিদ্রোহীদের কেউ হতাহত হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করেনি পাক প্রশাসন।
সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, বুধবার ভোরে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের গুলশান-ই-আদা এলাকা দিয়ে পাক সেনার একাধিক গাড়ির একটি কনভয় যাচ্ছিল। সেই সময়েই পাহাড়ি রাস্তায় ওত পেতে থাকা টিটিপি জঙ্গিরা সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। আকস্মিক এই হামলায় প্রাথমিকভাবে হকচকিয়ে গেলেও, দ্রুত পজিশন নিয়ে পালটা গুলি চালায় পাক বাহিনীও। দীর্ঘক্ষণ দু’পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই চলে। কিন্তু বিদ্রোহীদের মারণ হামলায় ঘটনাস্থলেই ১৫ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়।
হামলার দায় স্বীকার করে টিটিপি-র মুখপাত্র মহম্মদ খোরাসানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “এদিন ভোরে পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে টিটিপি-র সদস্যরা। আমাদের লড়াকু সদস্যদের হামলায় পাক সেনার দু’টি কনভয় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।”
উল্লেখ্য, আফগান সীমান্ত সংলগ্ন খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশ দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান সরকারের কাছে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আফগানিস্তানের মদতপুষ্ট টিটিপি এই অঞ্চলে নিজেদের শক্ত ঘাঁটি তৈরি করেছে এবং পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবিতে দীর্ঘকাল ধরে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলোর মধ্য দিয়েই গিয়েছে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা ‘সিপিইসি’। ফলে এই রুটে নিরাপত্তা বজায় রাখা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের।
এর আগেও গত জুন মাসে খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় এক ভয়াবহ ফিঁদায়ে হামলায় ১৬ জন পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। দফায় দফায় সেনার ওপর এই হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে, তাতে ভারতের প্রতিবেশী এই দেশটিতে যে কোনও সময় ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে।