স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলি করা হয়েছিল বোরোলিন

সবুজ রঙের টিউবে সাদা অ্যান্টিসেপটিক মলম।

August 15, 2024 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রেডিওয়ে শ্রাবন্তী মজুমদারের গলায় ‘সুরভিত অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বোরোলিন’ থেকে টেলিভিশানের পর্দায় বিদ্যা বালন, আবার ঋতুপর্ণ ঘোষের লেখা ‘বঙ্গজীবনের অঙ্গ’, সব মিলিয়েই বাঙালির নিজস্ব ক্রিম বোরোলিনের।

আজ বঙ্গ সন্তানদের বাঙালি সত্ত্বাকে অতিসহজে ব্যাখ্যা করতে; আমাদের বোরোলিনের দৃষ্টান্ত টানার প্রয়োজন হয়। বাংলা ও বাঙালির নস্টালজিয়া একটা গাঢ় সবুজ রঙের টিউব। তার ভেতরেই রয়েছে সেই মহামূল্যবান বস্তু, ‘বোরোলিন’। কাটা, ফাটা, পোড়া সমস্ত কিছুর একটিই দাওয়াই, বোরোলিন! জ্যাক অফ অল ট্রেডস। যার জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে। উত্তাল পরিস্থিতি দেশজুড়ে স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলন চলছে, ব্রিটিশদের দ্রব্য বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন বিপ্লবীরা। কার্যত জোয়ার শুরু হয়েছিল দেশীয় শিল্প উদ্যোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে, ১৯২৯ সালে গৌরমোহন দত্ত-এর জি ডি ফার্মাসিউটিক্যালে তৈরি হল বাঙালির ‘বোরোলিন’।

সবুজ রঙের টিউবে সাদা অ্যান্টিসেপটিক মলম। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা সামগ্রী হলেও, সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায় বোরোলিন। সামান্য একটা ক্রিমের মধ্যে দিয়ে মানুষ পেয়েছিল রুখে দাঁড়ানোর লড়াইয়ের মন্ত্র। ব্রিটিশদের শিল্পনীতিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল বোরোলিন। সেটাই সাহস আর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠল। সাহেবদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে, গৌরমোহনের অবতীর্ণ হয়েছিলেন হাতিয়ারের ভূমিকায়। হাতিমার্কা বোরোলিনকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল ব্রিটিশ। ফন্দি এঁটেও সফল হয়নি ব্রিটিশদের দুরভিসন্ধি।

তারপর এল স্বরাজ, স্বাধীন হওয়ায় পালা। সাতচল্লিশে স্বাধীনতা দিবসের দিন সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে বিতরণও করা হয়েছিল বোরোলিন। বাংলার বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে এক লক্ষ বোরোলিন উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। সে খবর সংবাদপত্রেও ছাপা হয়েছিল। একবিংশ শতকের দাঁড়িয়ে আজও সগৌরবে চলছে বোরোলিন, পেরিয়ে গিয়েছে ৯০ বছর, কিন্তু এক ইঞ্চিও ভাটা পড়েনি এর জনপ্রিয়তায়। বাংলার শীত গ্রীষ্ম বর্ষা বোরোলিনই ভরসা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen