বিএসএনএলের ব্রডব্যান্ড ও ল্যান্ডলাইনের জটে ব্যহত ব্যাঙ্ক- অফিসের পরিষেবা

অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিসের সাহায্য চেয়ে নবান্নে পর্যন্ত দরবার করছেন বিএসএনএলের কর্তারা।

June 17, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একে পরিষেবার খোঁজ নেই, দোসর হয়েছে কর্মী-বিক্ষোভ। আর তাতে একেবারেই লাটে উঠেছে বিএসএনএলের যাবতীয় কাজকর্ম। ব্রডব্যান্ড এবং ল্যান্ডলাইন পরিষেবা বহু দিন ‘ডেড’ কলকাতা ও শহরতলির ৪০ হাজারেরও বেশি পরিবারে। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, প্রশাসনিক ভবনের লিজ লাইন। যা মেরামত করার কোনও ব্যবস্থা বা সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতে নজরে আসছে না। আর তার প্রধান কারণ হল, আন্দোলনকারীদের সৌজন্যে তালা ঝুলছে ২০টিরও বেশি এক্সচেঞ্জে। খুব স্বাভাবিকভাবে সেগুলির আওতায় থাকা মোবাইল টাওয়ারগুলিও কাজ করছে না। এর ফলে বিপাকে লক্ষ লক্ষ গ্রাহক। কয়েক বছর আগেও যেখানে কলকাতা সার্কেলে ১৫ লক্ষ ল্যান্ডলাইন ছিল, এখন তা মাত্র ৪ লক্ষে এসে ঠেকেছে। হু হু করে পড়ছে ব্যবসার পারদ। তবু আন্দোলনে ভাটা নেই। অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিসের সাহায্য চেয়ে নবান্নে পর্যন্ত দরবার করছেন বিএসএনএলের কর্তারা।

কলকাতা সার্কেলে প্রায় আড়াই হাজার কর্মী আছেন, যাঁরা বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থার অধীনে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত। বিএসএনএলের লাইন সারাইয়ের কাজ তাঁরাই করে থাকেন। ওই কাজের জন্য ঠিকাদার সংস্থা মারফৎ বিএসএনএল থেকে মজুরি পান তাঁরা। সংস্থার আর্থিক ডামাডোলে সংস্থাগুলি পেমেন্ট পায়নি। তাই প্রায় এক বছর কর্মীদের বেতন বা মজুরি বন্ধ। বেতন পাচ্ছেন না আরও হাজার দেড়েক চুক্তিভিত্তিক কর্মী। মূলত এই কারণেই আন্দোলন। যার প্রভাব পড়ছে পরিষেবায়।

ব্রডব্যান্ড এবং ল্যান্ডলাইন পরিষেবা বহু দিন ‘ডেড’

বিএসএনএলের অফিসারদের বক্তব্য, ১৫ লক্ষ ল্যান্ডলাইন সংযোগ থাকাকালীন চুক্তিভিত্তিক কর্মীর সংখ্যা যা ছিল, এখনও তাই আছে। অথচ ল্যান্ডলাইন নেমে গিয়েছে ৪ লাখে। ঠিকাদার মারফৎ তাঁদের পাওনা মেটাতে হতো মাসে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এত টাকা আর দিতে চাইছে না বিএসএনএলের দিল্লির কর্পোরেট অফিস। বক্তব্য, কাজের পরিধি কমেছে। তাই যতটুকু কাজ, ততটুকুই মজুরি বা বেতন। কমাতে হবে কর্মীও।
পরিষেবা বাড়াতে নতুন নিয়ম করেছে দিল্লি। তারা বলেছে, ভেন্ডর বা ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগে নতুন করে টেন্ডার হবে। সেই অনুযায়ী, ১২ ঘণ্টার মধ্যে ল্যান্ডলাইন, তিন ঘণ্টায় লিজলাইন, চার থেকে আট ঘণ্টায় ব্রডব্যান্ড লাইন সারাই করতে বাধ্য থাকবেন কর্মীরা। না হলে পেনাল্টি দিতে হবে ঠিকাদার সংস্থাকে। গুজরাত, তামিলনাড়ু সহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় ১০০ শতাংশ টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। কলকাতা সার্কেলের ৩১টি জোনের মধ্যে হয়েছে মাত্র আটটিতে। কিন্তু আন্দোলনের জেরে কাজ শুরু হয়নি। পাছে টেন্ডারে অংশ নিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়, তার জন্য বাকি টেন্ডারেও সাড়া মিলছে না।

কলকাতা সার্কেলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ পাল বলেন, বিভিন্ন এক্সচেঞ্জে আমাদের কর্মী-অফিসারদের চরম হেনস্তা করা হচ্ছে। একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। আমিও নবান্নে গিয়েছি পুলিসের সাহায্য চাইতে। যেভাবে এক জায়গায় বহু লোক আন্দোলন করছেন, তাতে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল। আন্দোলনের জেরে পরিষেবা দিতে পারছি না। অথচ আমরা নিরুপায়। বকেয়া মেটানোর জন্য ঠিকাদার সংস্থা বিল দিচ্ছে না। পেমেন্ট আসছে না দিল্লি থেকেও। কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করে পরিষেবা চালু না করলে সমাধান মিলবে কী করে?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen