নির্বাচন কমিশনকে ‘ললিপপ’ তোপ, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলো নিয়ে BJP-কে আক্রমণ! বর্ধমানে রণং দেহি মমতা
SIR-র নামে বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির কথায় চলছে কমিশন।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৪১: মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। SIR-র নামে বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির কথায় চলছে কমিশন। কমিশনের উদ্দেশে মমতার নিদান, “ভোট এলেই এনআরসি করতে হবে? নতুন করে নাম কাটতে হবে? ইলেকশন কমিশনকে প্রণাম জানাই, সালাম জানাই। কিন্তু বিজেপির (BJP) ললিপপ হবেন না। মানুষ ক্ষমা করবে না।”
ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা নিয়েও এদিন ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বাংলার শ্রমিকরা এমনি এমনি বাইরে নেই। ভিনরাজ্যে তাঁদের ‘জামাই আদর’ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলার শ্রমিকেরা দক্ষ। কেন ওড়িশা, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, গুজরাতে বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, বাংলার মেধা ছাড়া বিদেশের নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। তিনি বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট গুজরাতের লোকদের কোমরে শিকল বেঁধে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাংলার মেধাকে তাড়াতে পারে না।”
মঙ্গলবার, ফের DVC-কে করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, এবার লাগামছাড়া বৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর ডিভিসির ছাড়া জল জেলাগুলিতে ভাসিয়ে দিচ্ছে। তা সত্ত্বেও যথাসাধ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে রাজ্য বলেও জানান তিনি। জেলাশাসকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বর্ষায় যাদের বাড়ি ভেঙে পড়ছে, ডিএমদের বলব, তার লিস্ট সিএসদের পাঠিয়ে দিতে। আমরা দ্রুত তাদের বাড়ি তৈরি করে দেব। বাংলা আবাস যোজনা নয়, এটা আমরা আলাদা করে করব।”
কেন্দ্রকে তোপে দেগে তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে, পানীয় জলের প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে, সর্বশিক্ষার টাকা ২ বছর বন্ধ, বাংলার বাড়ি বন্ধ, তা সত্ত্বেও ৪৭ লক্ষ মাটির বাড়ি পুনর্নিমাণ করেছি, এবছরে ১২ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরির টাকা দিয়ে দিয়েছি, আরও ১৬ লক্ষ মানুষ ডিসেম্বরে, বাকিরা জুন মাসে পাবে। সব মিলিয়ে আমরা এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি করে দিয়েছি।” ধান উৎপাদনে সারা দেশে বাংলা প্রথম বলেও এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের প্রশাসনিক সভা থেকে শুক্রবার দমদমে মোদীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে মমতার প্রশ্ন, “আপনার চেয়ারকে সম্মান করি, কিন্তু প্রশ্ন করতেই হবে, বাংলাকে চোর কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী?” মমতা বলেন, “আপনাদের ডবল ইঞ্জিন সরকার উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র সবচেয়ে বড় চোর। সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরও নম্বর কাটা হচ্ছে। বাংলাকে চোর বলা হচ্ছে। অথচ চোরদের, গদ্দারদের সঙ্গেই মিটিং চলছে। লজ্জা করে না!’’
নাম না করে মোদীকে একহাত নেন মমতা, বলেন, ‘‘লজ্জা, ঘৃণা, ভয়—এই তিন থাকতে নেই। একটা কান কাটা থাকলে আর একটা কান কাটার ভয় থাকে। ওদের দু’টো কানই কাটা! তাই আর ভয় কীসের? ইলেকশন এলেই আপনি রোজ পরিযায়ী শ্রমিকের মতো আসছেন। আমি চাই আপনি রোজ আসুন।”