রাজ্যপালরা কি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিল আটকে রাখতে পারেন? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে
উত্তরে প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, ধরুন নির্দিষ্ট কোনও কাজ যা রাজ্যপালের উপর ন্যস্ত সেরকম ক্ষেত্রে কী হবে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৩৩: বিধানসভায় পাশ হওয়া সত্ত্বেও ধর্ষণবিরোধী অপরাজিতা বিল, গণপিটুনি প্রতিরোধী বিল, হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অ্যামেন্ডমেন্টের মতো ২২টি বিল দীর্ঘদিন ধরে সম্মতির অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে রাজভবনে। এই অবস্থায় রাজ্যপালদের বিল আটকে রাখার ইস্যুতে মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার মৌখিক প্রশ্ন তোলে যে, রাজ্যপালরা কি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিল আটকে রাখতে পারেন? যদি রাজ্যপালরা এইভাবে দিনের পর দিন বিল আটকে রাখেন, তাহলে তা আইনসভাকে অকেজো করে দিতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কি আদালতের পদক্ষেপের কোনও ক্ষমতা নেই?
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিক্রম নাথ, পিএস নরসিমা ও এএস চন্দুরকরের সাংবিধানিক বেঞ্চে এদিন শুনানি ছিল। এর আগে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে বলেন, রাজ্যপাল কিংবা রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়ার অধিকার বিচার ব্যবস্থার নেই।
এর উত্তরে প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, ধরুন নির্দিষ্ট কোনও কাজ যা রাজ্যপালের উপর ন্যস্ত সেরকম ক্ষেত্রে কী হবে? কারণ সাংবিধানিক সংশোধনীতে মূল কাঠামোকে নষ্ট করা হলে বিচার ব্যবস্থা তার ব্যাখ্যা কিংবা তাকে খর্ব করতে পারে, তেমনই সাংবিধানিক কর্তাব্যক্তিরা কতটা উচ্চস্থানে রয়েছেন যে, তাঁরা কাজ না করলে আদালতের কোনও ক্ষমতা নেই সে ব্যাপারে? বিলে সম্মতি দেওয়া হতে পারে, অথবা খারিজ করা হতে পারে। আমরা সে ব্যাপারে ঢুকতে চাই না। কেন তিনি সম্মতি দিলেন বা দিলেন না তা নিয়েও আমাদের মাথাব্যথা নেই। ভাবুন তো, একটি আইন যা আইনসভা পাশ হয়ে গেল, তা সম্মানীয় রাজ্যপাল আটকে রেখে দিয়েছেন, তখন কী হবে?
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এদিন বলেন, রাজ্যপালের বিল আটকে রাখার বিষয়টি পুরোপুরি রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের বিষয়। কোনওভাবেই বিচার ব্যবস্থার এক্তিয়ারে নয়। এ ধরনের বিষয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই মীমাংসা হতে পারে। এই আদালত সংবিধানের রক্ষক। কিন্তু এমন কিছু সমস্যাও আছে যা আদালতের দ্বারা সমাধানযোগ্য নয়।
প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, নির্দিষ্ট সময়ে বিল ছাড়া জরুরি। না হলে পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়নমূলক প্রকল্প থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সমস্যা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এব্যাপারে জট কাটবে। সংবিধানের ২০১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজ্যপাল কোনও বিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিয়ে তা রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারেন। তখন রাষ্ট্রপতিকে সেই বিলে সম্মতি কিংবা অসম্মতি জানাতে হয়। সেই সিদ্ধান্তগ্রহণের জন্য সংবিধানে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।