মোদীর বিরুদ্ধাচারণের মাশুল? সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল

এ ব্যাপারে ছাড়পত্র মিলেছে কেন্দ্রের

April 8, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধাচারণের মাশুল? সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। এ ব্যাপারে ছাড়পত্র মিলেছে কেন্দ্রের। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল পদে থাকার সময় ঘুষের প্রস্তাব পেয়েছিলেন বলে প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন তিনি। এর পাশাপাশি কাশ্মীরে দু’টি প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কেন্দ্র অনুমোদন দিয়েছে। রাজ্যপাল পদে থেকেই বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে সরব হয়েছেন সত্যপাল। বিজেপি সরকারেরই মনোনীত রাজ্যপাল প্রধানমন্ত্রীকেও নিশানা করেছিলেন।  সেই সত্যপালকে জিজ্ঞাসাবাদে কেন্দ্রের অনুমোদনে প্রতিহিংসার তত্ত্বই সামনে এনেছে বিরোধীরা। 

কেন্দ্রের অনুমোদনের পর যে কোনও সময়ই শিলংয়ে হাজির হয়ে সত্যপালকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে সিবিআই।  বিরোধীরা বলেছে, সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, আয়কর বিভাগকে মোদি সরকার বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে, তা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এখন তো প্রশ্ন উঠে গেল, তাহলে কি মোদির সামান্য বিরোধিতা করা হলে বিজেপির ঘরের লোকেরাও পার পাবে না?  সত্যপালকে জেরার অনুমোদনে এই মানসিকতাই সাফ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এটা রুটিন তদন্তেরই অঙ্গ। 

সত্যপালকে মোদি সরকার প্রথমে জম্মু ও কাশ্মীর, পরে গোয়ায় রাজ্যপাল পদে নিযুক্ত করে। তারপর মেঘালয়ের রাজ্যপাল করা হয় তাঁকে। কংগ্রেস, জনতা দল ঘুরে বিজেপিকে যোগ দেওয়ার পর পুরস্কার হিসেবে রাজ্যপাল পদ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দ্রুত অবনতি হয় সম্পর্কের। তিন কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের সমর্থনে সরব হয়েছিলেন সত্যপাল। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে  কৃষি আইন  প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছিলেন। সত্যপাল অভিযোগ করেছিলেন যে, মোদির কাছে শীতল ও উদ্ধত ব্যবহার পেয়েছিলেন। কৃষক আন্দোলনের সামনে কেন্দ্রকে মাথা নোয়াতেই হবে বলে তিনি দাবি করেছিলেন। এমনকী, দিনসাতেক আগে একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘আমার নেহাৎ অনেক সম্পত্তি নেই। তিনবার বিধায়ক হয়েও নিজের বাড়ি নেই। যদি আমার সম্পত্তি-টম্পত্তি থাকত, তাহলে এতদিনে  সিবিআই, ইডি ঠিক আমার বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করত।  রাজ্যপাল পদে আমার মেয়াদ আর সাত মাস। এরপর আমি কৃষকদের ইস্যুতে নিজের মতো করে কর্মসূচি নেব।’ 

কিন্তু বাস্তবে সিবিআইয়ের তদন্তের হাত থেকে বাঁচলেন না ‘বিদ্রোহী’ রাজ্যপাল।  ২০২১ সালে রাজস্থানে এক অনুষ্ঠানে সত্যপাল অভিযোগ করেছিলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল থাকাকালীন দু’টি ফাইল ছাড়ার বিনিময়ে তাঁকে  ৩০০ কোটি টাকার ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। দেশের প্রথমসারির এক কর্পোরেট সংস্থা ও  সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্তরা তাঁকে ঘুষ দিতে চেয়েছিল বলে সত্যপাল অভিযোগ করেন। তিনি বলেছিলেন, আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন ওই ফাইল অথবা প্রকল্পের পিছনে রয়েছে বিপুল দুর্নীতি। তাই সেই ফাইল আটকে দেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীকেও ওই কথা জানান। সত্যপাল জানিয়েছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সাধুবাদ দিয়ে বলেছিলেন, আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। শুধু ওই ঘুষের প্রস্তাবই নয়, কাশ্মীরের স্বাস্থ্যবিমা যোজনা এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন সংক্রান্ত অনিয়ম নিয়েও সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করবে তাঁকে। অতএব সিবিআইয়ের জুজু এবার দল মনোনীত রাজ্যপালের দরজাতেও! 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen