তিন আইপিএস অফিসারকে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে বদলির নির্দেশ মোদী সরকারের, তীব্র আপত্তি নবান্নর

নয়াদিল্লির নর্থব্লকের একটি সূত্রের মতে, বিজেপি সভাপতির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে এই তিন উচ্চপদস্থ আইপিএস কর্তার উপর সরাসরি দায়িত্ব ছিল।

December 12, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার (JP Nadda) কনভয়ের উপর হামলার ঘটনায় এবার রাজ্যের তিন পদস্থ আইপিএস অফিসারকে বেনজির ভাবে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে বদলির নির্দেশ দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার (Narendra Modi)।

নয়াদিল্লির নর্থব্লকের একটি সূত্রের মতে, বিজেপি সভাপতির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে এই তিন উচ্চপদস্থ আইপিএস কর্তার উপর সরাসরি দায়িত্ব ছিল। তাঁদের কর্তব্যে ত্রুটি হয়েছে। সেই কারণেই তাঁদের কেন্দ্রে ডেপুটেশনে বদলি করা হয়েছে। ওই তিন জন আইপিএস অফিসারের এক জন হলেন প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীণ ত্রিপাঠি, এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) রাজীব মিশ্র এবং ডায়মন্ডহারবারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে।

কেন্দ্রের সরকারের তরফে ১১ ডিসেম্বর এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে নবান্নকে। সরকারি ভাবে অবশ্য নবান্ন বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকারের তরফে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে দিল্লির পদক্ষেপ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি লিখেছেন তৃণমূলের সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)।

বাংলায় এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্র তা করেছিল নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে। আইপিএস অফিসার রাজীব কুমারকে (Rajib Kumar) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু সরাসরি দিল্লির পদক্ষেপে তিন অফিসারকে এক সঙ্গে বদলি এই প্রথম।

রাজ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের এক শ্রেণির পদস্থ আইএএস ও আইপিএস কর্তা যে রাজনৈতিক প্রভুর নির্দেশে কাজ করেন সে ব্যাপারে বিরোধী দলগুলির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। অনেকের মতে, একুশের নির্বাচনের আগে তাঁদের উপর চাপ তৈরি করতেই এ পথে হাঁটল দিল্লি। তিন জনকে দিল্লিতে ডেপুটেশনে ডেকে আসলে বার্তা দেওয়া হল তিরিশ জনকে।

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও সে কথাই বলতে চেয়েছেন। অজয় ভাল্লাকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেছেন, পরোক্ষে বাংলায় জরুরি অবস্থা জারি করার চেষ্টা চলছে। আইএএস-আইপিএস অফিসারদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য অসৎ। আপনি বা অমিত শাহ কেউই আইনের উর্ধ্বে নন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে দেওয়া ওই চিঠিতে কল্যাণ আরও লিখেছেন, অমিত শাহর চাকর হয়ে কাজ করবেন না। আমরা আইএএস-আইপিএস অফিসারদের সম্মান করি। তাই বলছি, আপনিও রাজনৈতিক প্রভুর কথা না শুনে নিরপেক্ষ ভাবে ও দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করুন।

স্বরাষ্ট্র সচিবকে কল্যাণ চিঠি দিলেও নবান্ন (Nabanna) দিল্লিকে কিছু জানিয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয়। আইএএস-আইপিএস অফিসাররা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে হলেও বিভিন্ন রাজ্য বা কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ক্যাডার হয়ে কাজ করেন। এ ব্যাপারে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় থাকে। কেন্দ্র চাইলেই কোনও অফিসারকে রাজ্য সরকার ছেড়ে বাধ্য কিনা সে ব্যাপারেও বিতর্ক রয়েছে।

রাজনৈতিক সূত্র মতে, এ ধরনের বদলির নির্দেশের নেপথ্য উদ্দেশ্য কী তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারছেন। তবে হয়ত এখানেই ব্যাপারটা থেমে থাকবে না। হতে পারে আইএএস বা আইপিএস অফিসারদের কারও আয়ের অতিরিক্ত সম্পত্তি রয়েছে কিনা তা নিয়েও আগামী দিনে টানাটানি হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen