বাংলায় কবে হবে SIR, কী জানাল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার?
রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানান, বাংলায় SIR কবে হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:০৯: বিহারের পর বাংলাতেও কি শিগগিরই হবে SIR? কয়েক দিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। এ নিয়েই অবশেষে মুখ খুলল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানান, বাংলায় SIR কবে হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “বাংলায় SIR নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরবর্তী সময়ে। কমিশনের তিনজন নির্বাচন কমিশনার আলোচনার পরই সঠিক সময় ঘোষণা করা হবে।”
মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য অনুযায়ী, ডুপ্লিকেট এপিক সাধারণত দুই রকম পরিস্থিতিতে দেখা যায়। এক ক্ষেত্রে, ভিন্ন রাজ্যের দুই ব্যক্তির একই এপিক নম্বর থাকতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের এক বাসিন্দা এবং হরিয়ানার আরেক বাসিন্দার নম্বর এক ছিল। গত মার্চে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর কমিশন দেশজুড়ে সমস্যার সমাধান করে। প্রায় তিন লক্ষ মানুষের একই এপিক নম্বর বদলে দেওয়া হয়, যাতে একজনের নম্বর অন্যের সঙ্গে না মেলে।
অন্যদিকে, অনেক সময় একই ব্যক্তির নাম একাধিক ভোটার তালিকায় থেকে যায়। তখন তাঁকে আলাদা এপিক নম্বর দেওয়া হয়। এর কারণ, অনেকেই অন্যত্র স্থায়ীভাবে চলে গেলেও পুরনো ঠিকানা থেকে নাম কাটানোর আবেদন করেন না।
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ বা SIR। কমিশন জানিয়েছে, বিহারে শেষবার SIR হয়েছিল ২০০৩ সালে। বাংলায় শেষবার হয়েছিল ২০০২ সালে। কমিশনের দাবি, এর লক্ষ্য একটাই, যাতে কেবলমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরা ভোটদানের সুযোগ পান।
বিহারের পরে পর্যায়ক্রমে অন্য রাজ্যেও ভোটার তালিকার এই বিশেষ সংশোধনী হবে। বাংলায় ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। নজরুল মঞ্চে নদীয়া, দুই ২৪ পরগণা ও মুর্শিদাবাদ জেলার শতাধিক ব্লকের বিএলও-দের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিএলওদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এটিই বাংলায় ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনীর প্রথম ধাপ।
বিহারের ভোটার তালিকায় নেপালি ও বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ প্রসঙ্গে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার স্পষ্ট জানালেন, সংবিধান অনুযায়ী শুধু ভারতীয় নাগরিকেরাই বিধায়ক ও সাংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন। বিদেশিদের সেই অধিকার নেই।
তিনি আরও জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভোটার তালিকার তথ্য যাচাই চলবে। যাঁরা ভারতের নাগরিক নন, তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
বিহারের পর বাংলায়ও SIR চালু হতে পারে, এমন আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলে ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন, SIR আসলে NRC ও CAA-র অন্য নাম। তাঁদের দাবি, এই প্রক্রিয়ার আড়ালে ভোটার তালিকা থেকে প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
অভিযোগ আরও, নির্বাচন কমিশন নাকি কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের ইশারাতেই পদক্ষেপ করছে। তবে রবিবার কমিশন এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। কমিশনের বক্তব্য, “কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে SIR নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।”