আদি-নব্যের লড়াইয়ে বেসামাল বঙ্গ বিজেপিতে দলবদলুদের অবাধ প্রবেশ বন্ধ?
বিশেষত তৃণমূল থেকে আসা নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের গেরুয়াকরণে আপাতত রাশ টানলেন স্বয়ং অমিত শাহ।

ইতিমধ্যেই আদি-নব্যের লড়াইয়ে বেসামাল বঙ্গ বিজেপি। এর নেপথ্যে কারণ একটাই—দলবদল। তাই দলবদলুদের অবাধ প্রবেশে অবশেষে রাশ টানল রাজ্য বিজেপি। বিভিন্ন দল, বিশেষত তৃণমূল থেকে আসা নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের গেরুয়াকরণে আপাতত রাশ টানলেন স্বয়ং অমিত শাহ (Amit Shah)।
এই পরিস্থিতিতে পার্টিকে ‘তৃণমূলের বি টিম’ হওয়া থেকে আটকাতে ‘দরজা বন্ধ’ করার সিদ্ধান্তই নিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রবিবার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে যোগদান মেলার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য দলবদল পর্বে ছেদ পড়তে চলেছে। আর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘বিজেপিকে কোনওভাবেই তৃণমূলের বি টিম হতে দেব না। তাই আপাতত বিজেপির দরজা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, জেলাস্তরে দলবদলুদের নিয়ে অসন্তোষ ক্রমেই চরম আকার নিচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানের পার্টি অফিস জ্বালানোর ঘটনা গেরুয়া শিবিরে আদি-নব্যের দ্বন্দ্ব বেআব্রু করে দিয়েছিল। তারপর সোনারপুরে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সামনেই দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করেছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়েছে বিজেপিতে যোগদান করা প্রাক্তন দুই হেভিওয়েট তৃণমূল (Trinamool) নেতার মধ্যে গোলমাল।
বিজেপির এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ টিকিট প্রত্যাশীরা। একটি আসনে জন্য ৩০ থেকে ৫০টির বেশি আবেদন জমা পড়ছে। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর যা নিয়ে তীব্র দলীয় কোন্দল শুরুর আশঙ্কা করছে দিল্লি নেতৃত্ব। দলবদল বন্ধ রাখার এটাও একটা প্রধান কারণ। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মাত্র তিনটি আসনে জয়লাভ করেছিল বিজেপি (BJP)। যার মধ্যে ছিলেন খড়্গপুর থেকে জিতে আসা দিলীপ ঘোষও। ২০১৯ সালে তিনি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর থেকে জয়ী হন। ওই বছরই বিধানসভা উপনির্বাচনে আরও চারটি আসন জেতে বিজেপি। মোট বিধায়ক সংখ্যা হয় ৬। তারপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৪ জন বিধায়ক বিভিন্ন দল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। কিন্তু আসন্ন ভোটে তাঁদের কতজন টিকিট পাবেন? মধ্যেই এটা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। আর সম্ভাব্য দলবদলুরা? খাদের কিনারায় তঁারাই।