যুবভারতী কাণ্ড: গৃহীত অরূপের ইস্তফা, আপাতত নিজের হাতেই ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দপ্তর রাখলেন মমতা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:১০: ক্রীড়ামন্ত্রী পদে থেকে অব্যাহতি চেয়ে অরূপ বিশ্বাসের পাঠানো ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আপাতত ক্রীড়া দপ্তর অন্য কারও হাতে যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজের অধীনেই রাখছেন ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রক।
যুবভারতী কাণ্ডের আবহে ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠান অরূপ বিশ্বাস (Aroop Biswas)। সূত্রের খবর, অরূপের ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ ছাড়াও রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ। তিনি কেবল ক্রীড়া দপ্তর থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। ফলে রাজ্যের অরূপ মন্ত্রিসভায় থাকছেন। মঙ্গলবার, অরূপের ইস্তফাপত্র প্রকাশ্যে আসে। চিঠিতে সোমবারের তারিখ অর্থাৎ ১৫ ডিসেম্বরের উল্লেখ ছিল। উল্লেখ্য, যুবভারতী কাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ার পরই অরূপ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কমিটি যখন তৈরি হয়েছে তখন কোনও মন্তব্য করবেন না তিনি। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে অব্যাহতি চেয়েছেন অরূপ।
শনিবার শহরে এসেছিলেন মেসি (Lionel Messi)। তাঁকে দেখতে হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে যুবভারতীতে যান অনুরাগীরা। কিন্তু মেসিকে গ্যালারি থেকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। শুরু হয় তুমুল অশান্তি। চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। মাত্র ১৬ মিনিটে মাঠ ছাড়তে হয় মেসিদের। তিনি মাঠে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঘিরে ধরেছিলেন নেতা-মন্ত্রী, সাংবাদিক, সেলেব, নিরাপত্তারক্ষী আয়োজক কর্তাব্যক্তিরা ছিলেন। মেসি মাঠ ছাড়তেই ফেটে পড়েন ভক্তরা। ক্ষিপ্ত জনতা যুবভারতীতে ভাঙচুর চালায়। চেয়ার উপড়ে ছোড়া হয় মাঠে। মাঠের ভিতর ঢুকে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। পুলিশকে তাড়া করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছিল। শনিবারই মেসির সঙ্গে হায়দ্রাবাদে উড়ে যাচ্ছিলেন শতদ্রু। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে আয়োজক শতদ্রু দত্তকে গ্রেপ্তার করে বিধাননগর পুলিশ। রবিবার বিধাননগর মহকুমা আদালত শতদ্রুর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
উল্লেখ্য, ঘটনার তদন্তের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিটিতে আছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীরা। রবিবার যুবভারতী পরিদর্শন করেছেন তাঁরা। নমুনা সংগ্রহ করেছেন। দীর্ঘক্ষণ স্টেডিয়ামের ভিতরে বৈঠক করেছে তদন্ত কমিটি। সোমবার রাতে নবান্নের কাছে জমা পড়েছে তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট। গোটা ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি অসীমকুমার রায়। আজই যুবভারতী কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তা, ডিজি রাজীব কুমারকে শো-কজ করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। বিধাননগর পুলিশের কমিশনার মুকেশ কুমারকেও শো কজ করা হয়েছে। শনিবার মেসির অনুষ্ঠানে কেন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তার জবাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে তাঁদের। বিধাননগর পুলিশের ডিসি অনীশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিংকেও শো কজ করা হয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের CEO-কেও পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।