নিউটাউনে বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী, ১০ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা
কন্যাশ্রী, ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান বা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মতো এই ‘মাদার্স ওয়েটিং হাট’ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্ভাবন।
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বৃহস্পতিবার নিউটাউনে ১ হাজার ১০০ শয্যার বেসরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের শিলান্যাস করে আরও একবার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন ক্ষমতায় আসি আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ইনস্টিটিউশন ডেলিভারি কত? বলা হয়েছিল হয় তো ৬০-এর কাছাকাছি। আমি এই কষ্টটা বুঝতে পারতাম, কেন জানেন? আমরা নিজেরা বাড়িতে জন্মেছি। যা ইচ্ছে তাই একটা বয়স বসিয়ে দেওয়া হত। মাধ্যমিকে যা বয়স থাকত তাই বসিয়ে দেওয়া হত। আমি নিজে ভুক্তভোগী।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বাচ্চারা ইনস্টিটিউশনে ডেলিভারি কেন হবে না? আমাদের পাহাড় আছে, আমাদের জঙ্গল আছে, সুন্দরবন আছে, অনেক এলাকা আছে যেখানে মানুষ হাসপাতালে যেতে পারেন না। আগে ধাত্রীগণ ডেলিভারি করাতেন। সে সব শোনার পরই ইন্টেরিয়র অঞ্চলগুলোতে হাসপাতালের কাছাকাছি ‘মাদার্স ওয়েটিং হাট’ তৈরি করে দিয়েছি। যেখানে বাচ্চা জন্মানোর বেশ কিছুদিন আগে প্রসূতিদের নিয়ে আসা হয়। কাছাকাছি সেই হাসপাতালের ডাক্তার নজর রাখেন। আর যখন বাচ্চা হওয়ার সময় হয়, তখন হাসপাতালে সঙ্গে সঙ্গে শিফট হয়ে যায়।”
এর পরই বিরোধীদের উদ্দেশে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা খালি গালাগালি দিয়ে বেড়ায় তারা জানেই না এই ঘটনার কথা। আগে যে পরিসংখ্যাটা আনুমানিক ৬০ শতাংশ ছিল, আজ তা ৯৯ শতাংশে এসে ঠেকেছে। আমি মনে করি, যেদিন ১০০ শতাংশ ‘মাদার্স ওয়েটিং হাট’ হবে, সেদিন আমি সবচেয়ে খুশি হব।”
বস্তুত, কন্যাশ্রী, ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান বা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মতো এই ‘মাদার্স ওয়েটিং হাট’ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্ভাবন। রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মমতা। বলেন, “রাজ্যে ১৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে। ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট আগে জেলায় থাকত না। এসএনসিইউ আগে ৬টি ছিল। আমরা ৭১টি করেছি। ১৩ হাজার ৩৯২ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করেছি। ১১৭টি ন্য়ায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খোলা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যে বিপ্লব এনেছি। বিনামূল্যে চিকিৎসা দিই। ওষুধের ব্যবস্থা করি। আমাদের স্বাস্থ্যসাথী ৯ কোটি মানুষ পান। পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথী। আমরা গর্বিত।”
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সময় একটি বেসরকারি সংস্থা ১ হাজার ১০০ শয্যার এই হাসপাতাল তৈরি করবে বলেই জানিয়েছিল। সেদিনই মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে নিজে উপস্থিত থাকবেন। মাত্র ১৩-১৪ দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার নিউটাউন কনভেনশন সেন্টারের বিপরীতে হাসপাতালে শিলান্যাস। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই হাসপাতালে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। দুটি দফায় হাসপাতালের শিলান্যাস হবে। প্রথম দফায় ৫০০ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬০০ শয্যা হবে। ক্যানসারের চিকিৎসা যেমন হবে তেমনই আবার হাসপাতালে হার্ট অপারেশনের বন্দোবস্ত থাকবে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বন্দোবস্তও থাকবে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কমপক্ষে ১০ হাজার কর্মসংস্থান হবে হাসপাতালে।