বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকলেও ব্রাত্য স্বয়ং কবিগুরু!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ৯:০০: বিশ্বভারতীর সরকারি ওয়েবসাইটে একেবারে চোখে পড়ছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস ও বর্তমান উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষের ছবি। অথচ অনুপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই অনুপস্থিতিই তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।প্রাক্তনী, আশ্রমিক, এমনকি ঠাকুর পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টিকে ‘অবমাননা’ হিসেবে দেখছেন। সামাজিক মাধ্যমে চলছে প্রবল সমালোচনা। অনেকের প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাণপুরুষ রবীন্দ্রনাথের ছবি না থাকাটা কি কেবল প্রশাসনিক ‘অবহেলা’, নাকি এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও রয়েছে?
বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ জানিয়েছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষ দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা প্রশংসিতও হয়েছে। তবে নতুন ওয়েবসাইটে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যপালের ছবির পাশাপাশি তাঁর নিজের ছবিও রাখা হলেও প্রতিষ্ঠাতার ছবি বাদ যাওয়াতেই প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, ১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) রবীন্দ্রনাথ (Rabindranath Tagore) বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বজনীন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মিলনের আদর্শ নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্ত্রই পূর্ব ও পশ্চিমের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। নিয়ম অনুসারে রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠানটির পরিদর্শক, প্রধানমন্ত্রী আচার্য এবং রাজ্যপাল প্রধান। ফলে এঁদের ছবি ওয়েবসাইটে থাকা স্বাভাবিক হলেও, প্রতিষ্ঠাতার ছবি না থাকায় প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও আশ্রমিকদের মতে, আন্তর্জাতিক পরিসরে এটি ভুল বার্তা দেবে।
প্রাক্তন ছাত্র নুরুল হক বলেন, “আমাদের সময়ে সর্বত্র রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি অনুভূত হত। আজ তাঁর ছবি অনুপস্থিত দেখে বেদনাদায়ক লাগছে।” ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুরের মন্তব্য, “রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বিশ্বভারতী কল্পনাই করা যায় না। তাঁর ছবি না রাখা মানে তাঁর অবদান আড়াল করা।”
এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোর (UNESCO) পক্ষ থেকে শান্তিনিকেতনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর স্বীকৃতি পাওয়ার পর যেসব শ্বেতফলক বসানো হয়েছে, সেখানে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম। ছিল না শুধু বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। এই বিষয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।