শিশুদের সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ‘তৃতীয় ঢেউ’

সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ এখনও শিখরে পৌঁছেছে কি না সন্দেহ, তার মাঝেই এই প্রশ্ন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আম জনতাকে। আশঙ্কার প্রধান কারণ, ১৮ বছরের নীচের জন্য প্রতিষেধক আজও নেই।

May 24, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

তৃতীয় ঢেউয়ে (COVID Third Wave) কি আশঙ্কার কেন্দ্রে শিশুরা? সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ এখনও শিখরে পৌঁছেছে কি না সন্দেহ, তার মাঝেই এই প্রশ্ন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আম জনতাকে। আশঙ্কার প্রধান কারণ, ১৮ বছরের নীচের জন্য প্রতিষেধক আজও নেই। সেই উদ্বেগেই খানিকটা আশার আলো দেখাচ্ছে নেজাল ভ্যাকসিন। এখনও তা রয়েছে পরীক্ষাগারের পর্দার আড়ালেই। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে এই টিকা যে কার্যকর হতে পারে, সে ব্যাপারে আশা প্রকাশ করল খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (হু)। সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন নিজেই জানিয়েছেন, ভারতের নেজাল ভ্যাকসিন আগামী দিনে দিশা দেখাতে পারে বিশ্বকে।

এক ইংরেজি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেন সৌম্যা। সেখানে এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ভারতে বেশ কিছু সংস্থা নেজাল ভ্যাকসিন তৈরি করছে, যা করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় পথ দেখাবে। রবিবারই নীতি আয়োগের সদস্য ডাঃ ভি কে পল বলছিলেন, ‘শিশুরা করোনা আক্রান্ত হলে তারা উপসর্গহীন হচ্ছে। না হলে দেখা দিচ্ছে খুব সামান্য উপসর্গ। ফলে সাধারণত তাদের হাসাপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হচ্ছে না।’ তারপরই সংবাদমাধ্যমের কাছে এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানান সৌম্যা। তিনি বলেন, প্রথমত, এই টিকা প্রয়োগ সহজ। দ্বিতীয়ত, নেজাল ভ্যাকসিন শিশুর (children) শ্বাসযন্ত্রে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলবে। যদিও কবে এই ভ্যাকসিন বাজারে আসবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি হুয়ের এই বিজ্ঞানী। তবে ততদিন আরও বেশি সংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ক, বিশেষ করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের টিকাকরণে জোর দিতে বলেছেন সৌম্যা। যাতে গোষ্ঠী সংক্রমণ কমে এলে স্কুল ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে অন্যান্য বহু দেশই এমনটা করেছে বলে জানান তিনি।

প্রথম ঢেউয়ে প্রবীণ, দ্বিতীয় পর্যায়ে তরুণ প্রজন্ম। আক্রান্তের এই প্রবণতাই এখন তৃতীয় ঢেউ নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে। আর সেই সঙ্গে এসে যাচ্ছে শিশুদের সংক্রমণের প্রসঙ্গ। আগামী দিনে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়তে পারে, এই আশঙ্কায় বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে শিশুদের জন্য পৃথক পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। তবে নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্য ডাঃ পল বলেছেন, ‘ভারত তথা গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির হার ৩ থেকে ৪ শতাংশ। বেশি খেয়াল রাখতে হবে ১০-১২ বছরের কিশোর-কিশোরীদের। কেননা ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা তাদেরই সবথেকে বেশি।’

মোদি সরকার অবশ্য দ্বিতীয় ঢেউ থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে। শুরু হয়েছে আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়া। ইতিমধ্যে রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতে শিশুদের টিকাকরণ শুরু না হলেও আমেরিকা সেদেশের ১২-১৭ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের টিকার জন্য ফাইজার-বায়োএনটেককে অনুমোদন দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মডার্না ১২-১৭ বয়সি তিন হাজার শিশুর উপর পরীক্ষামূলকভাবে তাদের টিকা প্রয়োগ করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই ফল পাওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে সৌম্যা স্বামীনাথন বলেছেন, ‘শিশুদের করোনা টিকা নিয়ে বহু সংস্থা ট্রায়াল শুরু করেছে। তবে, অ্যাডিনো ভাইরাস থেকে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা অন্যান্য সংস্থার ভ্যাকসিনে শিশুদের উপর প্রতিক্রিয়া বেশি হওয়ায় গবেষণা হোঁচট খাচ্ছে। যদিও লাইনে আরও ভ্যাকসিন রয়েছে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen